প্রসব অভিজ্ঞতা কেন পড়বেন?
প্রথমেই আসুন জানি প্রসব অভিজ্ঞতা কী, কারন খুব বেশি দিন হয়নি যে এই বিষয়টা নিয়ে বাংলা ভাষায় আমাদের পড়ার সুযোগ হয়েছে। মূলত মাতৃত্বই এই নিয়ে প্রথম লেখা প্রকাশ করতে শুরু করে। আমাদের নাটক সিনেমায় যেভাবে মা হওয়াকে চিত্রায়ন করা হয় তাতে গর্ভবতী মাকে একজন ভিকটিম বলে মনে হওয়া স্বাভাবিক এবং এমন চিত্রায়ণ অনেকের মনে মা হওয়াকে এক ভীতিকর ঘটনা হিসাবে তুলে ধরে। তার উপর পাঠ্যবই বা গণমাধ্যম কোথাওই ঠিক প্রসবের সময়টা কিভাবে একজন মা সামলে উঠবেন এই নিয়ে সঠিক দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা নেই।
আবার একেক মায়ের শারিরিক অবস্থা এবং অভিজ্ঞতাও একেকরকম। হাসপাতালকেন্দ্রিক প্রসব হওয়ায় নিজে মা হওয়ার আগে মেয়েদের এই বিষয়ে গঠনমূলকভাবে জানার সুযোগ নিতান্তই কম। তাই প্রয়োজন এখন মায়েরা নিজেদের প্রসব অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজেরাই বলবেন যেন ভবিষ্যৎ মায়েরা আগে থেকেই এই নিয়ে বিশদ ধারণা রাখতে পারেন, না দেখেই পুরো দৃশ্যটা মানসপটে ধারণ করতে পারেন।
তাই প্রসব অভিজ্ঞতায় থাকবে একজন মায়ের গর্ভকালীন চ্যালেঞ্জগুলো ও তা মোকাবেলায় তিনি কী কী করেছেন তার বিজ্ঞানসম্মত, বাস্তব তথ্য। তিনি কিভাবে তার সাধ্যের মাঝে সেরা প্রসব অভিজ্ঞতা অর্জনে গর্ভাবস্থা থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন তার উল্লেখ থাকবে। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা তিনি কিভাবে প্রসবব্যথা সামলেছেন বা সিজারিয়ান সেকশন মোকাবেলা করেছেন। এই সত্যি গল্পগুলো থেকে আমরা আশা করতে পারি হবু মায়েদের সেরা প্রসব অভিজ্ঞতা অর্জনে উপকার হবে ইনশাআল্লাহ।
এবার আসুন জানি এমন কিছু মায়েদের কথা তাদের কাছ থেকেই যারা প্রসব অভিজ্ঞতা পড়ে উপকৃত হয়েছেন।
উম্ম হামযাঃ সারাদিনের ব্যস্ততায় দিনের শেষ টুকু সময়ে ঘুমোবার আগে আমরা মেয়েরা একবার আয়না দেখি, নিজেকে দেখি। আমার আমি কে দেখি। চিরাচরিত আমার আমি হঠাৎই যেন বদলে যায় মা হওয়ার প্রস্তুতিতে। শরীর তো নিজস্ব গতিতে তৈরি হতে পারে পরম আরাধ্য সন্তানকে দুনিয়ার আলো দেখাতে। কিন্তু মন? সে কি মানিয়ে নিতে পারে এই পরিবর্তনের সাথে?
বলছিলাম কেন পড়ব প্রসব অভিজ্ঞতা। সন্তান জন্মদান একই সাথে সহজ আর জটিল প্রক্রিয়া। এই যে হঠাৎ কোমরে ব্যাথা, তলপেটে ব্যাথা, ক্লান্তি, নিদ্রাহীনতা ইত্যাদি ইত্যাদি শুরু হয় – কী করব, কোথায় যাবো, কে বুঝবে আমাকে, কে একটু সুপরামর্শ দিবে এর জন্য মন খুজে নির্ভরশীল কাউকে।
এই যে বললাম এই প্রক্রিয়া একইসাথে সহজ আর জটিল- যদি আমরা জানি কখন কি হতে পারে, কেন হতে পারে, কোনটা স্বাভাবিক, কখন আমি চিন্তামুক্ত থাকবো আর কখন চিন্তা করব – তাহলে মাতৃত্ব, প্রসব প্রক্রিয়া সহজ। আর যদি কিছুই না জানি তাহলে অথই সমুদ্রে পড়ে যাবো।
পরীক্ষা যখন দিতে হবে তার প্রস্তুতি তো থাকা চাই। আমরা যদি গুছিয়ে না পড়ি, না জানি আমরা তথ্য নিব আগের যুগের বৃদ্ধাদের কাছে যারা নিজেরাও আসলে অনেক ব্যাপারে ভুল জেনে আসছেন৷ ফলাফল হয় দুশ্চিন্তা। কোন কিছুই যেন মনমতো হয় না। অথচ গর্ভাবস্থায় এটা খুবই জরুরী মা যেন চিন্তামুক্ত থাকেন।
পেশাগত কারণে প্রচুর সন্তান জন্মদান দেখেছি। বেশিরভাগ মা ই কিছুই জানেন না। কোথাও কিছুই পড়ে আসেননি৷ তাই জানেন না কিভাবে নিজের যত্ন নিতে হয়, কি কতটুকু খেতে হয়, হাইজিন কিভাবে মেইনটেইন করবে এবং শেষতক কিভাবে বাচ্চাকে দুনিয়াতে আনবে। মায়েরা থাকেন নার্ভাস। নরমাল ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি যেখানে যোনীপথ দিয়ে বাচ্চা বের হয় – সেখানে মায়েরা ঘাবড়ে যান। বুঝতে পারেন না – পুশ করা কি, কিভাবে পুশ করবেন, ‘চাপ’ আসা বা প্রেশার ফিল করা বিষয়টা কি। তাই অযথা লেবার বা প্রসবের সময়কে বাড়িয়ে ফেলেন এবং ভাবেন এটা ভীতিকর অভিজ্ঞতা। অথচ আগে থেকেই যদি উনি জানেন – জরায়ুমুখ খোলা কি, পানি ভাঙা বলতে কি বুঝায়, যখন বাচ্চার মাথা নিচে নামে তখন কেমন ফিল হয়, কখন পুশ করতে হয়, কিভাবে রিল্যাক্সড থাকতে হয় তাহলে কিন্তু এই একই অভিজ্ঞতা পরিণত হবে সাহসে। আবার কখন নরমাল ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি সম্ভব নয়, সিজারিয়ান সেকশন হলে কিভাবে নিজের যত্ন নিতে হবে,এনেস্থিসিয়া কিভাবে দেয়, ইফেক্ট কি হতে পারে, সেলাইয়ের যত্ন নিতে হবে, কোন কাজটা এড়িয়ে যাবেন, কোনটা করতে পারবেন – এই সব কিছু জানা থাকলে অপারেশন টেবিলে আপনি ঘাবড়ে যাবেন না। অপেক্ষা করবেন ছোট্ট সুন্দর একটা মুখ দেখার।
এত সব বুঝতে হলে জানার বিকল্প নেই। আমাদের জানতে হবে, পড়তে হবে৷ প্রত্যেকটা মায়ের প্রসব অভিজ্ঞতা ভিন্ন কিন্তু একই সুতোয় গাথা যেন। প্রত্যেকেই সেই ব্যাথা, নিদ্রাবিহীন রাত, পাশের জনের সাথে খিটমিট – কমবেশি অনুভব করে। অন্যের প্রসব অভিজ্ঞতা যদি ভালো হয় তাহলে নিজের মধ্যে সাহসের সঞ্চার হয়। মনে হয় যেন – না, আমিও পারবো।
আজ থেকে ৯.৫ মাসে আগে আল্লাহর রহমতে আমি এই প্রসব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। প্রচুর পড়াশোনা করেছি, মাতৃত্ব ওয়েবসাইট থেকে প্রসব অভিজ্ঞতাগুলি পড়েছি। প্রতি মাসে কখন কি হচ্ছে, কি করলে ভালো হবে, কিভাবে চলতে হবে, কি খেতে হবে জানতে পেরেছি। অবশেষে সেই রাত যে রাতে বৃষ্টি সহ আমার সন্তানের আগমন – ঘাবড়ে যাই নি। জানতাম এখন কি হবে, কি কি হতে পারে। যেভাবে রিল্যাক্স থাকা নিয়ে পড়েছি সেভাবে এপ্লাই করলাম, যেভাবে পুশ করা নিয়ে পড়েছি পুশ করলাম। এভাবেই আমার জ্ঞান আমার কাজে আসলো আলহামদুলিল্লাহ।
এখানেই শেষ না৷ জানতে হবে এপিশিওটমি কি, সিজারিয়ান সেকশনের সেলাই কি, স্কার কি, ব্রেস্টফিডিং এর এ টু যেড। জানতে হবে পোস্ট পারটাম ডিপ্রেশন কি আর সাইকোসিস কি। এজন্য মাতৃত্ব ওয়েবসাইট আমাদের সাথে আছে৷
সব নারী, সব মায়ের উচিত প্রসব নিয়ে জানা। নিজের জন্য, নিজের বোনের জন্য, নিজের ভাবীর জন্য।
উম্ম ফাতিমাঃ আমি কন্সিভ করার পর থেকে বিভিন্ন লিখা খুঁজতাম প্রসব সংক্রান্ত। এসময় অনেক প্রশ্ন থাকে।অনেক কিছু নিয়ে চিন্তা লাগে। আর আমার যেহেতু নরমাল ডেলিভারির খুব ইচ্ছা ছিল।এজন্য এই সংক্রান্ত লিখা খুজতাম বেশি।বিশেষ করে যাদের নরমাল ডেলিভারি হয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা শুনতে ইচ্ছা হত।কিন্ত এখন এমন একটা অবস্থা নরমাল ডেলিভারির হয়েছে এমন গল্প খুব কমই শুনা যায়। আমার প্রেগন্যান্সির চার বা পাচ মাসের দিকে পরিচিত এক আপুর শুনলাম নরমাল ডেলিভারি হয়েছে এবং বেবি ও সাইজে বড় ছিল।শুনে আপুকে নক দিলাম।কিভাবে হল জানতে চাইলাম। আপু জানালেন দেশের বাইরে থাকায় বড় বেবি নরমালে ডেলিভারি করা তার জন্য সহজ ছিল। তখন মনে হতো দেশের বাইরে তো,এজন্যই নরমালে করাতে পেরেছেন। ওই আপু আমার নরমালে করার ইচ্ছা দেখে মাতৃত্ত পেজে এড দেয়। পেজে ঢুকে দেখলাম অনেক দরকারি লিখা আছে প্রসব নিয়ে।এবং এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো লাগলো,যখন দেখলাম প্রসব অভিজ্ঞতা নিয়ে অনেক আপুর অভিজ্ঞতার গল্প আছে। এই সময়ে সবচেয়ে উপকারী ছিল এই অভিজ্ঞতা গুলো জানা।নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে পেরেছি এবং নিজেকে বুঝাতে পেরেছি যে আমি পারবো ইনশাআল্লাহ। অনেকে ভয় দেখায় ব্যাথা সহ্য করতে পারবা না। কিন্তু আপুদের গল্প গুলো পড়াতে ব্যাথা সহ্য করাটা এতটা কঠিন মনে হয়নি এবং প্রসবের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটাও অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল।আমি নিজে মালেশিয়ার এক আপুর সাজেশন ফলো করেছি কারন আমার প্রেগন্যান্সির জন্য ওইটা ফলো করা সহজ ছিল। এই অভিজ্ঞতা গুলো এতটা ইন্সপায়ার করেছিল যে আমার নরমাল ডেলিভারি হলে সেই অভিজ্ঞতা পেজের সবার সাথে শেয়ার করব তখনই ঠিক করে রাখছিলাম। যদি আমার অভিজ্ঞতা থেকে অন্য কোনো বোনের উপকার হয়। জাজাকাল্লাহ খাইরান পেজের সব বোনদেরকে।
উম্ম মুহাম্মাদঃ মাতৃত্ব একটা জটিল অনুভূতি। প্রথম প্রেগন্যান্সীর অভিজ্ঞতা তো জটিলতর। সবই নতুন। জানা থাকলেও নতুন, না জানা থাকলেও নতুন। সব কিছুতে ভয়, আশংকা, সন্দেহ, চিন্তা, সাথে কত প্রশ্ন! এজন্যে খুব আগ্রহ নিয়ে মা হবার গল্প গুলি পড়তাম। একেকজনের অভিজ্ঞতা একেক রকম। একেক জনের গল্প থেকে একেক রকম শিক্ষা ছিল। সব কিছু আমাদের পুঁথিতে লেখা থাকে না। এটা এতটা প্র্যাক্টিকাল আর ডাইনামিক আর ইউনিক একটা বিষয় প্রত্যেকের জন্যে যে কিছু ট্যাক্টিস, অভিজ্ঞতা লব্ধ শিক্ষারও দরকার পড়ে। প্রেগন্যান্সির জার্নি, লেবার পেইন শুরু হওয়ার সময় গুলি, পেইন কোপ আপ করার জন্যে একেক জনের একেক রকম চেষ্টা, পরবর্তী যত্ন, একেক গল্পের সাফল্য ব্যর্থতা থেকে শেখার থাকে অনেক কিছু। যেমন পেইন ম্যানেজমেন্টের বিষয়গুলো, আর পেইন উঠার জন্যে ট্যাক্টিস গুলি সবই আমার জন্যে নতুন ছিল। আগ্রহ নিয়ে একেক আপুর গল্প পড়তাম, আর কিছু না কিছু জেনে থাকতাম ম্যাক্সিমাম গল্পগুলি থেকে। এজন্যে সুযোগ থাকলে প্রসব অভিজ্ঞতা নিয়ে গল্পগুলো পড়া উচিত। নিজের প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়, মানসিকভাবে জোর বাড়ে, অন্যের ভুল গুলি যেন নিজের ক্ষেত্রে না হয় সে ব্যাপারে সাবধান থাকা যায়, সবচেয়ে বড় ব্যাপার একেবারেই অজ্ঞ না থেকে সচেতন থাকা যায় যে কি হচ্ছে না হচ্ছে বা কি হতে পারে না পারে বিশেষ করে প্রথম প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রে যেখানে সব ই নতুন। আমি নিজে অনেক কিছু শিখেছিলাম। অনেক কিছু আমার উপকারে এসেছিল। আমার বিশ্বাস অন্যদের ও উপকার হবে যেমন আমার হয়েছিল। (পড়ুন উম্ম মুহাম্মাদের প্রসব অভিজ্ঞতা আমার মুহাম্মাদ হওয়ার গল্প। )
উম্মে আমাতুল্লাহঃ প্রসব অভিজ্ঞতা নিয়েও যে লেখা যেতে পারে এটা আমি প্রথম জানি আমার দ্বিতীয় প্রেগন্যান্সির সময়। তখন নিউযিল্যান্ডে ছিলাম। প্রেগন্যান্সি নিয়ে একটা ম্যাগাজিন হাতে পাই যাতে অনেকগুলো বার্থ স্টোরি বা প্রসব অভিজ্ঞতা ছিল। আমি যেন মুদ্ধ হয়ে পড়তাম সেগুলো। নরমাল ডেলিভারির জন্য যে কোন সময় হাসপাতালে যেতে হতে পারে তাই আগে থেকেই একটা ব্যাগ গুছিয়ে রাখা উচিত যা প্রয়োজনের সময় তুলে সাথে নিয়ে যাওয়া যাবে – এমন অনেক ছোট ছোট কিন্তু খুব দরকারী তথ্য জানতে পারি সেখান থেকে। অনেকের সাফল্যের অভিজ্ঞতা পড়ি। নরমাল ডেলিভারি মানেই ভিকটিমের ভূমিকা পালন করা না, মা হওয়ার পর নিজেকে বিজয়ী মনে হওয়াও সম্ভব এই অন্যরকম তথ্যটা জানতে পারি অনেকের লেখা পড়ে। প্রথম বার মা হওয়ার সময় অনেক কিছুই জানতাম না। লেবার পেইনের সময় মনে হচ্ছিল, পেটের ভিতর একটা বাবু ঢুকেছে এখন কিভাবে এই বাবু বের হবে! কিন্তু দ্বিতীয় বার পড়াশোনা করে এতটাই ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলাম যে লেবার পেইনের কোন স্টেজে কী করতে হবে সব ঠিক ঠিক করতে পেরেছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। অনেকগুলো ইতিবাচক প্রসব অভিজ্ঞতা পড়ার ফলে নিজের লেবার পেইনের সময় আমার অত্যন্ত পজেটিভ মাইন্ড সেট ছিল। আমি বলব যে, গর্ভাবস্থায় অন্যের ইতিবাচক প্রসব অভিজ্ঞতা নিয়ে পড়লে নিজের মনের ওপরও ভীষণ ইতিবাচক প্রভাব পড়ে! আমার অভিজ্ঞতা শেষ পর্যন্ত আমার প্রত্যাশা অনুযায়ী খুবই ভালো ছিল আলহামদুলিল্লাহ। তাই আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি যে আমার দ্বিতীয় ডেলিভারির অভিজ্ঞতা আমার জীবনের সেরা অর্জন কারন প্রথমত আল্লাহর সাহায্যের পর আমি নিজেও এই সাফল্য অর্জনে কাজ করেছিলাম। জীবনে প্রথমবারের মতো বুঝেছিলাম মেয়েদের শরীর আল্লাহর কী নিপুন এক সৃষ্টি যার বিভিন্ন অসুবিধা ছাপিয়ে তা সত্যিই সেলিব্রেট করার উপযুক্ত!
(পড়ুন উম্মে আমাতুল্লাহর প্রসব অভিজ্ঞতা প্রথমবার ফোরসেপ দ্বিতীয়বার প্রাকৃতিক প্রসবের গল্প। )
উম্ম নুসাইবাঃ প্রেগন্যান্সি একটি স্বাভাবিক কিন্তু অনন্যসাধারণ ঘটনা। শারিরীক-মানসিক পরিবর্তনের সাথে সাথে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করা। এসময় হবু মায়েদের থাকে অনেক রকমের জিজ্ঞাসা। কি হচ্ছে, কি হওয়া উচিত, কি করলে সহজ হবে এমন অনেক অনেক প্রশ্ন মাথায় এসে ভর করে। অভিজ্ঞদের জিজ্ঞাস করা, তাদের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, তার সাথে নিজের অবস্থান মিলিয়ে নিদেনপক্ষে ধারনা নেওয়া সবচাইতে সহজলভ্য উপায়। কঠিন জায়গাগুলোকেও সহজে তুলে ধরে, পজিটিভ একটা ভাইব তৈরি করে আমরা মায়েরা একটা সাপোর্ট গ্রুপ সহজেই বানিয়ে নিতে পারি। প্রেগন্যান্সির এই বৈচিত্রপূর্ন্য সময়ে কে কিভাবে উতরে এলাম, সেইসব মায়েদের সাহসী গল্প নিয়ে আমাদের মাতৃত্বের আয়োজন। মায়েরা তাদের সন্তান জন্মের ঘটনা বর্ননা করেছেন সাবলীল ভাষায়। মর্নিং সিকনেস, মুড সুইং, হাই ব্লাড প্রেশার, জ্যাষ্টেশনাল ডায়াবেটিস, ব্রিচ পজিশন, প্রেগন্যাসি ডিপ্রেশন সহ অনেক রকম অবস্থায় অনেকে কাটিয়েছেন প্রেগন্যান্সির পুরোটা সময়। কারো হয়তো ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি হয়েছে, কারো প্ল্যানড সি-সেকশন, আবার কারো সবকিছু স্বাভাবিক থাকার পরও শেষ মুহূর্তে ইমারজ্যান্সি সি-সেকশন লেগেছে। হবু মায়েরা আপনারা যারা এরই মধ্যে প্রেগন্যান্সির জার্নি শুরু করে ফেলেছেন, কিংবা করবেন ভাবছেন, তাদের জন্য একটা ট্রেজার হতে পারে এই রিয়েল লাইফ এক্সপেরিয়েন্সগুলো। প্রেগন্যান্সি নিয়ে জানুন, স্টাডি করুন।
আমাদের সবগুলো প্রসব অভিজ্ঞতা দেখুন এখানে।
আপনিও কি আপনার ইতিবাচক প্রসব অভিজ্ঞতা লিখে অন্য মায়েদের সাথে শেয়ার করতে চান? হবু মায়েদের উৎসাহ দিতে চান? তাহলে আর দেরী না করে ঝটপট লিখে পাঠিয়ে দিন আমাদের ইমেইলে বা ফেসবুক পেইজের ইনবক্সে।
লিখেছেন –
রাবেয়া রওশীন,
প্রিনাটাল ইন্সট্রাকটর,
রৌদ্রময়ী স্কুল