নতুন মায়েদের জন্য কার্যকর ব্রেস্টফিডিং টিপস
- Posted by MNCC Moderator
- Categories Blog, Doulas
- Date December 1, 2024
- Comments 0 comment
নবজাতকের সুস্থ ও মজবুত শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য মায়ের দুধ সবচেয়ে উপকারী। তবে নতুন মায়েদের জন্য ব্রেস্টফিডিং শুরুতে একটু কঠিন মনে হতে পারে। মায়েদের জন্য কিছু কার্যকর ব্রেস্ট ফিডিং টিপস দেওয়া হলো, যা মায়ের ও শিশুর দুজনের জন্যই সহায়ক হতে পারে।
১. প্রাকৃতিকভাবেই শুরুর দিকে চেষ্টা করুন
শিশু জন্মের পর প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে ব্রেস্টফিডিং করানোর চেষ্টা করা উচিত। এই সময় শিশুর শক্তি বেশি থাকে এবং সে শ্বাস-প্রশ্বাসে, খাওয়ার প্রক্রিয়ায় মানিয়ে নিতে দ্রুত সক্ষম হয়। প্রথম দুধকে কোলাস্ট্রাম বলা হয়, যা শিশুর ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।
২. সঠিক অবস্থান খুঁজে নিন
ব্রেস্টফিডিং সফল করতে সঠিক অবস্থান নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর মুখ এবং আপনার স্তনের নিপল একই লেভেলে রাখতে হবে। শিশুকে মুখ খোলা অবস্থায় স্তনের নিপলের কাছাকাছি নিয়ে আসুন। সন্তানের মুখের নিচের দিকে নয়, বরং ওপরের দিকে অ্যারিওলা (স্তনবৃন্তের চারদিকের কালো অংশ) দেখা যাবে। আপনার সন্তানের মুখ বড় করে খোলা থাকবে। নিচের ঠোঁট খানিকটা উল্টে থাকবে। থুতনি স্তন স্পর্শ করে বা কাছাকাছি লেগে থাকবে৷
৩. ধৈর্য ধরুন এবং আরামে বসুন
ব্রেস্টফিডিংয়ের সময় আরামে বসার চেষ্টা করুন, কেননা এই প্রক্রিয়াটি কিছুটা সময় সাপেক্ষ হতে পারে। আরামদায়ক একটি চেয়ার বা বিছানায় বসে কুশন বা বালিশ ব্যবহার করতে পারেন যাতে আপনি এবং শিশুটি আরামদায়ক অবস্থানে থাকতে পারেন। প্রথমদিকে ধৈর্য ধরে একটু বেশি সময় দিন যাতে শিশুর ব্রেস্টফিডিংয়ের অভ্যাস তৈরি হয়।
৪. বারবার চেস্টা করুন এবং শিশুর সিগনাল বুঝুন
শিশু ক্ষুধার্ত হলে সে নিজেই সংকেত দেয়। যেমন, সে জিহ্বা বের করা, হাত মুখে দেয়া বা কান্না শুরু করা। শিশুর এই সংকেতগুলো বুঝে তাকে ব্রেস্টফিডিং করানো উচিত। বিশেষত, কান্না শুরু হওয়ার আগেই তাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিন, কারণ কান্না শিশুর ক্ষুধা বাড়ায় এবং খাওয়ার সময় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান
ব্রেস্টফিডিংয়ের সময় মায়ের শরীর থেকে প্রচুর পানি এবং শক্তি বের হয়ে যায়। এজন্য পর্যাপ্ত পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াটা খুব জরুরি। প্রোটিন, ভিটামিন, ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে শরীরের পুষ্টি ধরে রাখুন। প্রচুর পানি পান করলে দুধের পরিমাণও বজায় থাকে।
৬. প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিন
ব্রেস্টফিডিংয়ের বিষয়ে মায়ের যদি কোন সমস্যা বা দ্বিধা থাকে, তবে ডাক্তার বা ল্যাক্টেশন কনসালটেন্টের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। তারা সঠিক পদ্ধতি ও পরামর্শ দিয়ে মায়ের ব্রেস্টফিডিংকে সহজ করতে সহায়তা করতে পারেন।
৭. পাম্পিং এবং স্টোরেজ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন
যদি কর্মক্ষেত্রে যেতে হয় বা কিছু সময় শিশুর থেকে দূরে থাকতে হয়, তবে দুধ পাম্পিং করার উপায় শিখে নিতে হবে। পাম্প করা দুধ কিছুক্ষণ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়, যা পরবর্তীতে শিশুর জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
৮. নিজের যত্ন নিন
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন মা হিসেবে ক্লান্তি বা মানসিক চাপ অনুভব করতে পারেন। তাই বিশ্রাম, স্বাস্থ্যকর খাবার ও মনের স্বস্তি নিশ্চিত করা উচিত, যা ব্রেস্টফিডিং প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তুলবে।
ব্রেস্টফিডিং শুরুর দিকে একটু কঠিন মনে হতে পারে, তবে ধৈর্য ধরে এবং সঠিকভাবে যত্ন নিয়ে এটি খুব সহজ এবং আনন্দদায়ক হয়ে উঠবে।
তাসনিম সুশান আজাদ
দৌলা ইন্টার্ন, রৌদ্রময়ী স্কুল
চাইল্ডবার্থ এডুকেটর ও দৌলা ট্রেইনি, আমানি বার্থ
Other post
You may also like
মুবাশশিরার লেড উইনিং
December 1, 2024
মুবাশশিরার বয়স যখন ৫ মাস ২৫ দিন, তখন থেকেই আমি ওকে সলিড দেওয়া শুরু করি। কারণ সলিড শুরু করার সব সাইন আলহামদুলিল্লাহ তার মধ্যে দেখা গিয়েছিলো। সে বসতে পারতো, খাবারের প্রতি আগ্রহ দেখাতো, ঘাড় ডান থেকে বামে ঘুরাতে পারতো, মুখের …
মা হওয়ার পরের দিন গুলোতে ভালো থাকা
December 1, 2024
১)প্রথম সন্তানের মা হওয়া সবার জন্য কতই আকাঙ্খিত। ৩৭ সপ্তাহ শেষে ইডিডির বেশ আগেই হঠাৎ পেইন উঠে নরমাল ডেলিভারিতে হয়েছিল আমার মেয়ে। হাসপাতালে যখন যাই তখন ৩ সেমি জরায়ু মুখ খুলেছিল। তারপরও রুটিন অনুসারে সেলাইন, পিটোসিন, ডেলিভারির সময় এপিসিওটমি দেওয়া …
হোম বার্থঃ স্বপ্ন বনাম বাস্তবতা (পর্ব ২)
November 25, 2024
বার্থ প্ল্যানের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ডেলিভারি কোথায় হবে—বাসায় নাকি হাসপাতালে? হোম বার্থের জন্য সবার আগে প্রয়োজন ডেলিভারিবান্ধব পরিবেশ। এক্ষেত্রে মা যদি নিজ বাসায় তার পরিচিত জায়গায় ডেলিভারির সময়টাতে থাকতে পারে, যা তাকে মানসিকভাবে ধীর, স্থির ও শান্ত রাখবে, তা …