প্রেগন্যান্সিতে টক দই
প্রেগন্যান্সিতে টক দই
প্রেগন্যান্সিতে ক্যালসিয়ামের গুরুত্ব নিয়ে তো আমরা জানি এবং সেই সাথে এটাও জানি যে ডেইরী প্রোডাক্ট থেকে আমরা ক্যালসিয়াম পেতে পারি। কিন্তু ডেইরী প্রোডাক্ট বলতে কেন যেন শুধু এক গ্লাস দুধের কথাই আমাদের মাথায় ঘোরে!
যেখানে বাইরের দেশে প্রচুর পরিমাণে চিজ, বাটার, ইয়োগার্ট (দই), দুধ ইত্যাদি ডেইরী প্রোডাক্ট-এর ভিন্নতা থাকে মানুষের খাবারে সেখানে আমরা শুধু দুধের উপরই নির্ভর করি। মানলাম, চিজ-বাটারের মতো খাবার আমাদের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে নিয়মিত খাওয়া সম্ভব না। কিন্তু টক দই তো আমাদের হাতের নাগালেই আছে, তাই না?
জানেন কি, ১০০ গ্রাম দুধে আছে ১১৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আর ১০০ গ্রাম টক দইয়ে আছে ১১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। খুব কাছাকাছি কিন্তু! সেই সাথে ১০০ গ্রাম টক দইয়ে আছে ১০ গ্রাম প্রোটিন!! এটা প্রেগন্যান্সিতে আপনার দৈনিক প্রোটিনের চাহিদার প্রায় ছয় ভাগের এক ভাগ বলা যায়। টক দইতে আছে প্রোবায়োটিক যা আপনার পরিপাকতন্ত্রে বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য আনে, যা আপনার ডাইজেস্টিভ হেলথের জন্য উপকারী। এ থেকে ইউরিনারি ট্র্যাৃক্ট ও ভ্যাজাইনাতেও উপকারী ব্যাকটেরিয়ার আবাদ হয়। এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া নরমাল ডেলিভারির সময় মায়ের থেকে বাচ্চার কাছে পৌঁছে।
প্রেগন্যান্সিতে খাবার থেকে সর্বোচ্চ পুষ্টি গ্রহণের খাতিরে খাবার ধীরে হজম হয়। আর তাই রিচ ফুড জাতীয় খাবার খেলে এই সময় অস্বস্তির পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। কিন্তু কুরবানীর ঈদের পর তো ভারী খাবার খাওয়া হয়েই যাচ্ছে সবার, তাই না? এই সময় টক দই দিতে পারে আপনাকে দারূণ স্বস্তি। খাবারের সাথে টক দই দিয়ে রায়তা বানিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। যে কোন মানুষের জন্য এতে হজমের সুবিধা হবে আর প্রেগন্যান্ট মায়েদের জন্য অতিরিক্ত অস্বস্তি কমানোর পাশাপাশি দৈনিক প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণেও সাহায্য করবে। অস্বাস্থ্যকর কোল্ড ড্রিংকসের আর প্রয়োজন হবে না।
মূলত টক দই আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় স্থান পাওয়া উচিত। তাজা ফল বা মধুর সাথে মিশিয়েও এটা খেতে বেশ লাগে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি – অনেক উপকার পেয়েছি প্রেগন্যান্সিতে এটা নিয়মিত খেয়ে, আলহামদুলিল্লাহ।
রাবেয়া রওশীন,
প্রিনাটাল ইন্সট্রাকটর
রৌদ্রময়ী স্কুল