Back

রামাদানে শিশুদের ব্যস্ত রাখার কৌশল

রমাদানে মায়েরা একটু ধীর স্হির হয়ে ইবাদাত করার সময় খুবই কম পায়। তাই বাবুকে কয়েক ধরনের প্রোডাক্টিভ খেলনা বা এক্টিভিটি দিয়ে কিছুটা সময়ের জন্য ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করা যেতে পারে।
 
🧩পাজল সেট
বাবুকে পাজল সেট কিনে দিতে পারেন। কিছু পাজল সেট আছে যা দিয়ে ঘর, বাস, ট্রাক ইত্যাদি বনানো যায়। নামাজ পড়ার আগে আপনি কিছুক্ষণ বানিয়ে ওর সাথে খেলতে থাকুন। এরপর বাবুকে বানাতে দিয়ে আপনি নামাজ পড়ে ফেলুন। মাঝে বিরতি দিয়ে দিয়ে তার বানানো জিনিসগুলোর প্রশংসা করুন। বাচ্চারা প্রশংসা পছন্দ করে। এতে করে সে যতটুকুই পারবে, তাই বার বার বানানোর উৎসাহ পাবে।
 
🎨কালার পেন্সিল
ড্রয়িং বুক এবং কালার পেন্সিল কিনে দিন। অবশ্যই প্রানীর অবয়ব ছাড়া যদি দিতে পারেন, তাহলে ভালো হয়। সে বিভিন্ন রং দিয়ে কালার করতে কিছুটা ব্যস্ত থাকবে, ইন শা আল্লাহ।
 
📑ক্রাফটিং পেপার
আর্ট পেপার কিনে আপনি নিজে কাঁচি দিয়ে কেটে কেটে তাকে ভাজ করে বিভিন্ন শেপে চাঁদ তারা বানিয়ে দিন। এরপর তাকে সেগুলো কালার করতে দিয়ে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন।
 
📋স্টিকার ও পেপার
স্টেশনারির দোকানে খুবই কম দামি কিছু ফুল, ফল, পাতা, তারা ইতালির স্টিকার পাওয়া যায়। এসব আপনি একটা সাদা পাতায় বাবুকে লাগিয়ে দেখালে সেও নিজে নিজে লাগাতে চেষ্টা করবে। এরপর সে স্টিকার লাগানো আবার উঠানের কাজে ব্যস্ত থাকবে কিছুক্ষণ।
 
📿জায়নামাজ
নমাজ পড়ার সময়, বাবুকেও একটা কলারফুল জায়নামাজ ও হিজাব বা টুপি দিন। একটি তাসবীহও দিতে পারেন। আপনাকে দেখে দেখে সেও নামাজ আদায় করবে, সিজদাহ দেয়ার চেষ্টা করবে।
 
📚বই
কলারফুল বা ক্লথ বইগুলো দেয়া যেতে পারে। বাবু নতুন নতুন জিনিস দেখে চিনতে চেষ্টা করবে এবং পেজ উল্টে আরও দেখার আগ্রহ তৈরি হবে।
 
📖কুরআনের গল্প
কুরআনের নবীদের গল্প নিয়ে এখন অনেক অনেক বই আছে। সেগুলো থেকে গল্প শুনাবেন। এবং নামাজ পড়ার সময় তার হাতে দিয়ে দিবেন। সে বইয়ের ছবি দেখবে, অনুভব করবে।
 
🧉হাড়ি পাতিল ইফতার বানানো
বাবুকে হাঁড়িপাতিল সেট দিতে পারেন। দিয়ে বলতে পারেন পরিবারের রোজাদারদের জন্য সাহরী বা ইফতার বানাও। যেহেতু এখন রমজান মাস এবং সে পরিবারকে ইফতার করতে দেখছে, তাই এ কাজেও আগ্রহ বোধ করার কথা।
 
🍑ফ্রুট সেট
এক ধরনের ফ্রুটস সেট পওয়া যায় যেটা আগে থেকেই মাঝখানে অর্ধেক করে কাটা থাকে। সেগুলো দিয়েও ইফতারের জন্য জুস বানাতে বলতে পারেন।
 
🚗গাড়ির সেট
যে বাবুদের গাড়ি পছন্দ। তাদেরকে কয়েকটি ছোট ছোট গাড়ি এবং একটি বক্স দিয়ে গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করা আবার পার্ক করা এ ধরনের খেলা খেলে দেখাতে পারেন। এরপর সে নিজে নিজেই এভাবে খেলার চেষ্টা করবে।
 
🏦সাদাকহ ব্যাংক
ছোট একটি টাকা রাখার ব্যাংক কিনে, সেখানে প্রতিদিন বাবুর হাত দিয়েই কয়েন সাদাকহ করাতে পারেন। এরপর সেই ব্যাংক তাকে খেলতে দিলেই ঝুনঝুন শব্দে আনন্দ পাবে। এতে করে বাবু সাদাকাহ করতেও আগ্রহী হবে। কেন এক কদর এর রাতে ব্যাংক এর সব টাকা বাবুর হাত দিয়েই কাউকে দান করতে পারেন। পাজল সেট দিয়েও সাদাকাহ ব্যাংক বানিয়ে দিতে পারেন।
 
🌃রমাদান কর্ণার
ঘরের কোন এক কর্ণারের টেবিলে বা দেয়ালে রমাদান ব্যানার লাগিয়ে একটু লাইটিং করে দিলে বাবু একটু অনুভব করতে পারবে যে নিশ্চয়ই এখন বছরের অন্য কোন সময়ের চেয়ে একটু আলাদা। নামাজের সময় লাইটিং চালু রাখতে পারেন।
 
কাউন্সিলিং
বাবুকে আগে থেকেই বলে বলে প্রিপেয়ার করে রাখা যে, এ মাসটা ইবাদাতের মাস। আম্মু নামাজ পড়বে, ইবাদাত করবে। বাচ্চারা আমাদের অনেক কথাই বুঝে থাকে। তাই তার সাথে সুন্দর করে কথা বলে বুঝানোর চেষ্টা করা। কাউন্সিলিং এর কাজটা কিন্তু একদিনে হয়ে যায় না। আপনাকে প্রতিদিন একটু একটু করে তাকে বুঝাতে হবে। এভাবে একদিন সে অল্প করে বুঝতে শুরু করবে, ইন শা আল্লাহ।
এখানে উল্লেখিত সবগুলো এক্টিভিটি ফলো করতে হবে না। আপনার সন্তানের বয়স, চাহিদা এবং পছন্দ অনুযায়ী ২-৩টা ভিন্ন ধরনের এক্টিভিটি ও খেলনা দিবেন। কারণ একই জিনিস দিয়ে সে প্রতিদিন খেলতে চাইবে না। তাই প্রতিদিন একটু খেলনা উল্টে পাল্টে দিলে তার একঘেয়েমি লাগবে না।
এতোকিছুর পরেও কখনও কখনও আপনার সন্তান জেদ করবে, কান্না করবে, কিছুতে মানবে না। তখন তাকে কোলে নিয়েই তিলওয়াতের সুরে আপনার মুখস্থ করা সূরাগুলো পড়তে পারেন।
 
ইশরাত জাহান তৃষা
প্রিনেটাল এসোসিয়েট
রৌদ্রময়ী স্কুল

Leave A Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *