Back

প্রেগন্যান্ট মায়েদের রমাদান প্রস্তুতি

প্রেগন্যান্সির সময় শারীরিক দুর্বলতা, বমিভাব, ব্যথা বা ক্লান্তির কারণে নামাজ, দীর্ঘ সময় তিলাওয়াত করা কষ্টকর হতে পারে। তবে এই সময়টাতে আমল ও ইবাদাহ থেকে পুরোপুরি দূরে থাকা ঠিক না, বরং শরীর ও মনের অবস্থা অনুযায়ী কিছু প্রোডাক্টিভ আমল করা যেতে পারে।
 
📌 ১. হৃদয় দিয়ে আল্লাহকে স্মরণ করুন (Living Dhikr)
অজু না থাকলেও, শারীরিক দুর্বলতা থাকলেও তাসবীহ, দোয়া, ওযীফা চালিয়ে যেতে পারেন।
“সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এই যিকিরগুলো সহজ কিন্তু অনেক সওয়াবের।
কুরআনের ছোট ছোট আয়াত বা দোয়া মুখস্থ থাকলে মনে মনে পড়তে পারেন (যেমন আয়াতুল কুরসি, সূরা ফাতিহা, তিন কুল)।
 
📌 ২. দোয়ার মাধ্যমে কানেকশন বাড়ান
সন্তান এবং নিজের জন্য বেশি বেশি দোয়া করুন। নবী (ﷺ) বলেছেন, মায়ের দোয়া কবুল হয়।
সন্তানের জন্য ইলম, তাকওয়া, দ্বীনের পথে চলার জন্য দোয়া করতে পারেন
 
📌 ৩. ছোট ছোট সাদাকাহ ও উপকারমূলক কাজ
অনলাইনে বা মোবাইলের মাধ্যমে সাদাকাহ দিতে পারেন।
কারও জন্য কিছু উপকারী লিখতে পারেন
(আপনার মত নতুন বাবা প্রেগন্যান্ট মায়েদের জন্য দুইটা ভালো কথা লিখতে পারেন)
কারও জন্য দোয়া করা বা তাকে কঠিন পরিস্থিতিতে সাহস জোগানোও বড় সাদাকাহ।
 
📌৪. কুরআনের সাথে সংযুক্ত থাকুন (বিকল্পভাবে)
দীর্ঘ সময় তিলাওয়াত করতে না পারলে অল্পতে তিলাওয়াত করুন
অডিও কুরআন শুনতে পারেন।
একেবারে না পড়তে পারলে কিছু ছোট সূরা মুখস্থ করতে পারেন বা অর্থ নিয়ে ভাবতে পারেন।
সূরা ইউসুফের ঘটনা বুঝে বুঝে পড়া মনের শান্তির জন্য দারুণ হতে পারে।
 
📌 ৫. ইসলামিক বই বা আর্টিকেল পড়া ও লেখা
হালাকা বা দ্বীন ইসলামের কথা হচ্ছে এমন মজলিসে শামিল হন
ইসলামিক বই পড়ুন।
আপনি যা শিখছেন সেটা অন্যদেরকে শেখানোর চেষ্টা করুন।
📌 ৬. নফস সংশোধন ও ইখলাসের চর্চা
গর্ভাবস্থার মানসিক চ্যালেঞ্জ অনেক, তাই নিজের নফস সংশোধনের জন্য সবর ও শোকর চর্চা করতে পারেন।
নিজের নিয়ত শুদ্ধ করা, রাগ কমানো, কৃতজ্ঞতা বাড়ানো—এগুলো ছোট কাজ মনে হলেও বড় আমল।
 
📌 ৭. আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরি করা
কখনো যদি মনে হয়, “কিছুই করতে পারছি না”—তাহলে অন্তত আল্লাহকে ডাকুন, মনে মনে আল্লাহর সাথে কথা বলুন।
যেই গুনাহগুলো আপনাকে আল্লাহর থেকে দূরে রাখছে, সেই গুনাহগুলো ত্যাগের চেষ্টা করতে পারেন।
💡 প্রতিদিন একবার হলেও বলুন: “রাদিতু বিল্লাহি রাব্বা, ওয়া বিল ইসলামি দিনা, ওয়া বিমুহাম্মাদিন (ﷺ) নবিয়্যাঁ”
অর্থ: আমি আল্লাহকে আমার রব হিসেবে গ্রহণ করেছি, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করেছি, এবং মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে নবী হিসেবে গ্রহণ করেছি।)
 
📌 ৮. ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি (সন্তানের জন্য পরিকল্পনা
সন্তানের নাম, তার জন্য দ্বীনি পরিবেশ তৈরির পরিকল্পনা করতে পারেন।
কীভাবে সন্তানকে ভালো মুসলিম বানাবেন, সেই বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন।
প্রেগন্যান্সির সময় আমল ও ইবাদাহ একটু কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু আল্লাহ নিয়ত ও কষ্টকে মূল্যায়ন করেন। আপনি যদি কিছু করতে না পারেন, তবুও এই অনুভূতিগুলো ইবাদাহর অংশ। আল্লাহ যেন আপনার সন্তানকে নেককার, দ্বীনদার এবং কল্যাণকর বানান।
আল্লাহ আপনাকে ও আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখুন এবং আপনার গর্ভাবস্থাকে রহমতের সময় বানিয়ে দিন।
 
আপনি কীভাবে আপনার রামাদানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন?
 
শারিন সফি অদ্রিতা
প্রিনেটাল ইন্সট্রাক্টর, রৌদ্রময়ী স্কুল
মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলর

Leave A Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *