ঘুম ও সন্তানের বেড়ে উঠা
আমার দুই সন্তানের প্যারেন্টিং এর ক্ষেত্রে যে বিষয়ে আমি অনেকের কাছেই অবাক মন্তব্য শুনেছি তা হলো আমার বাচ্চাদের ঘুমের সময়। অবাক হওয়ার কারণ আমি বাংগালী হয়েও দুই বাচ্চার ক্ষেত্রেই জন্ম থেকে যথেষ্ট আর্লি বেড টাইম ফলো করি।
আমাদের সন্তানদের বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে ঘুম খুবই দরকারি ভূমিকা পালন করে। ঘুমের সাথে হাসি খুশি থাকা, মেজাজ, মনোযোগ, Cognitive development, লার্নিং, মেমোরি, ইত্যাদি অনেক বিষয় সম্পর্কিত। এটা আমার কথা না, বিশেষজ্ঞদের কথা। ঘুম বাচ্চার লার্নিং ডেভেলপমেন্টের জন্য খুব জরুরী। যে বাচ্চার ঘুম ভালো পরিমাণে হয়, সেই বাচ্চা মানসিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকে; তাদের মনে রাখার ক্ষমতা ভালো হয়; Longer attention span থাকে; এবং একইসাথে Hyperactivity, বিষন্নতার পরিমাণ কম থাকে।
আবার আমরা অনেক সময় বাচ্চাদের উইক ডেইজ আর উইকেন্ডের ঘুমের সময় এক রাখিনা। উইকেন্ড নাইট, একটু মজা করুক বলে নরমাল ঘুমের সময়ের চেয়ে অনেক পরে হয়তো বাচ্চারা ঘুমাতে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে যেসব বাচ্চার স্কুলের দিনের আর উইকেন্ডের ঘুমের সময়ে দুই ঘন্টার পার্থক্য থাকে, তাদের মধ্যে অন্য বাচ্চাদের তুলনায় ডিপ্রেশনের পরিমাণ বেশি থাকে।
ভালো ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য বিশেষজ্ঞদের মতে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবেঃ
১) ঘুমের জন্য আর্লি সময় নির্ধারণ করা অর্থাৎ বেশি রাত না করা। আমার বাচ্চাদের বেড টাইম ৮-৮.৩০টা।
২) ঘুমের আগে ফ্রেশ আপ হয়ে (যেমনঃ দাঁত ব্রাশ করা, একটু বড় বাচ্চাদের ওযু করানো, দোয়া পড়া, বেডটাইম স্টোরি পড়া) ঘুমের প্রস্তুতি নেওয়া। চাইলে রুমের লাইট বন্ধ করে দিয়ে Dim light ব্যবহার করা যায়।
৩) উইক ডেইজ কিংবা উইকেন্ডে ঘুমের সময় একই রাখা।
৪) স্কুলে যাওয়া শুরু করলে বাচ্চার ডে-টাইম ন্যাপ ৩০মিনিটের বেশি না রাখা। ভালো হয় ন্যাপ বাদ দিয়ে রাতে আর্লি ঘুম পারানো।
এখন একটু খেয়াল করে দেখুন তো বিশেষজ্ঞদের বলা পয়েন্টের সাথে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা) শিখানো ঘুমানোর সুন্নাহ গুলোর সংযোগ স্থাপন করতে পারছেন কিনা?
নাঈমা আলমগীর,
প্রিনাটাল ও প্যারেন্টিং ইন্সট্রাকটর
রৌদ্রময়ী স্কুল