এক্টোপিক প্রেগ্ন্যান্সির আদ্যোপান্ত
- Posted by MNCC Moderator
- Categories Blog, Others
- Date May 4, 2024
- Comments 0 comment
◾প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসার পর অনেকে চিন্তা করেন ‘শুরুতে আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর প্রয়োজন নেই। শেষের দিকে ৭/৮ মাসে USG করলেই হবে বাচ্চার পজিশন বোঝার জন্য!’
এটা আসলে একটা ভুল চিন্তা। প্রেগন্যান্সির শুরুতেই ৭/৮ সপ্তাহের দিকে একটা USG করা খুবই জরুরী ভ্রুণের অবস্থান জানার জন্য।
যাতে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির মত একটি মারাত্মক প্রাণঘাতী অবস্থার জটিলতা এড়ানো যায়। আসুন এ বিষয়ে আরেকটু জেনে নেই –
🔵এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি কী?
এটা গর্ভাবস্থার এমন একটি অবস্থা, যেখানে ভ্রুণ জরায়ুতে না হয়ে অন্যত্র হয়। সে হতে পারে ডিম্বাশয়ে/ডিম্বনালীতে/জরায়ুর অগ্রভাগ(cervix)/ জরায়ুর বাইরে পেটের অন্যত্র কোথাও।
জরায়ুর (যেখানে গর্ভাবস্থায় সন্তান বেড়ে ওঠে) বাইরে স্থাপিত হওয়ার কারণে ভ্রূণটি বড় ও পরিণত হতে পারে না। তবে এই অবস্থাতেও যদি ভ্রূণটি বেড়ে উঠতে থাকে, তাহলে গর্ভবতী নারীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হলে গর্ভের সন্তানকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। ওষুধ প্রয়োগ বা অপারেশনের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটাতে হয়।
🔵এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি কেন হয়?
অনেক সময় এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির কারণ পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় না। মাঝে মাঝে ডিম্বনালীতে কোন সমস্যা থাকলে, যেমন যদি এর পথ সরু হয় বা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এটি হতে পারে।
🔵এক্টোপিক প্রেগন্যন্সির লক্ষনগুলো কিকি ?
[ ] ভ্যাজাইনা থেকে অল্প রক্তপাত
[ ] ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব
[ ] তলপেটে ব্যথা
🔵এক্টোপিক প্রেগনেন্সি’র চিকিৎসা কিভাবে হয় ?
যদি ডাক্তার মনে করেন কোন কারণে ফেলোপিয়ান টিউবটি নষ্ট হয়ে গেছে , এমার্জেন্সি সার্জারি না করলে রক্তপাত বন্ধ করা সম্ভব নয়, তখন এই সার্জারি করা হয়ে থাকে । অনেক সময় ফেলোপিয়ান টিউব এবং ওভারি নষ্ট হয়ে গেলে তা কেটে বাদ দিতে হয় ।
আবার অনেকসময় ফেলোপিয়ান টিউবটি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হয় না, সেক্ষেত্রে দেখা গেছে প্রেগন্যান্সির বিকাশও আটকে যায় । ল্যাপরোস্কোপিক সাজার্রি করে ভ্রূণ বাদ দিয়ে, ক্ষতিগ্রস্থ অংশ সারিয়ে তোলা হয় । সার্জারির সময় ফেলোপিয়ান টিউবে একটি ছোট ছিদ্র করে ভ্রূণ বার করা হয় ।
🔵এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হবার কতদিন পর সন্তান নেবার চেষ্টা করবেন?
বাবা,মা দুইজনেই শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত মনে করলে আবার গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। এক্টোপিক প্রেগনেন্সির জন্য চিকিৎসা নেওয়ার পর আবার গর্ভধারণের চেষ্টা করার আগে অন্তত দুইবার ঋতুস্রাব হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যেন মায়ের শরীর প্রথমে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
পরিশেষে, অবশ্যই অবশ্যই প্রেগনেন্সি পজিটিভ আসার পর ডাক্তারের পরামর্শ নিন। পজিটিভ আসার পর যেকোন ধরণের পেট ব্যথাকে/রক্তক্ষরণকে গুরুত্ব দিন। আক্রান্ত মাকে মানসিকভাবে সাহস যোগান। জটিলতা তৈরি হওয়ার আগেই যদি চিকিৎসা করা হয় তবে মায়ের ক্ষতি অনেকাংশেই এড়ানো যাবে।
– আফসানা মিমি
ডেন্টিস্ট, রৌদ্রময়ী প্রিন্যাটাল কোর্স, ব্যাচ ৫
Other post
You may also like
হাসপাতালে ন্যাচারাল বার্থ সম্ভব: একজন মায়ের অনুপ্রেরণামূলক গল্প
আমি একজন দৌলা হিসেবে আজ একটি অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প শেয়ার করতে চাই। আমার ক্লায়েন্ট আফরোজা আপুর ডেলিভারির অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, সঠিক প্রস্তুতি ও মানসিক দৃঢ়তা থাকলে হাসপাতালে ন্যাচারাল বার্থ সম্ভব।আফরোজা আপু ন্যাচারাল বার্থের প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন। তার স্বামীও …
নরমাল ডেলিভারি: খুবই ভালো অভিজ্ঞতা
গত ১৮ অক্টোবর প্রথমবারের মত পুত্রসন্তানের মা হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। নরমাল ডেলিভারি ছিল, এক্সপেরিয়েন্স খুবই ভাল ছিল আল্লাহর রহমতে।গ্রুপের পোস্ট ফলো করতাম কনসিভ করার পর থেকেই। গ্রুপের পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছি। দায়িত্বশীল এবং সবার জন্য অনেক অনেক দু’আ।আমি দেশের …
অতিরিক্ত ওজন নিয়ে নরমাল ডেলিভারির গল্প
সেপ্টেম্বর এর ১৪ তারিখ আলহামদুলিল্লাহ নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে আমার প্রথম রাজকন্যার মা হলাম। আমার বার্থ স্টোরি শুরুর আগে আমি আমার কনসিভ করার আগের কিছু কথা শেয়ার করতে চাই যাতে আমার মতো যারা একটু মোটা তারা কিছুটা হলেও অনুপ্রাণিত হোন ইনশাআল্লাহ। আমি …