নবজাতকের যত্ন – পর্ব-১
নতুন বাবুটা নিয়ে আসলাম হাসপাতাল থেকে। এখন কি করি? মা, খালা, শাশুড়ি, প্রতিবেশী কত কথা বলতেই আছে, আমি তো ভালো মন্দ কিছু ই বুঝিনা। তাহলে কি তাদের সবকথাই মানব? বাচ্চা কষ্ট পাবেনা তো?
চলুন কিছু জিনিস জেনে নেই ইনশাআল্লাহ।
• বাবুর মাথা এমন নরম কেন? দপদপ করে কেন?
– বাচ্চাদের মাথার সামনে দিকে ও পিছন দিকে খুলিতে দুটি ফাঁকা থাকে। যা ২ বছর হতে হতে ঠিক হয়ে যায়। এটা বাচ্চার জন্মপ্রক্রিয়া সহজীকরণ ও ডেভেলপমেন্টের জন্য আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি পদ্ধতি।
ভয়ের কিছু নাই। শুধু বাচ্চার মাথা সবসময় সাবধানে হ্যান্ডেল করবেন।
• বাবুকে তো খাওয়াতেই পারছি না। কি হবে এখন?
– অনেক বাচ্চাই প্রথমদিকে দুধ পায়না, যা খুব স্বাভাবিক। এসময় বারবার ব্রেস্ট সাক করাতে হবে। মায়ের সাথে স্কিন টু স্কিন কন্টাক্ট করতে হবে। দরকার হলে ব্রেস্ট পাম্প করে ড্রপার বা চামচ দিয়ে বাচ্চাকে খাওয়াবেন। কিন্তু ফিডার দিবেন না। কারণ বাচ্চা ফিডারে অভ্যস্ত হয়ে গেলে ব্রেস্ট সাক করতে চায়না।
• নাভি পরছে না কেন?
– বাচ্চার নাভির কথা একদম ভুলে যেতে হবে। মায়েরা নাভি পরছেনা কেন ভেবে হালকা টান দিতে চেষ্টা করে। ফলে ইনফেকশনের চান্স থাকে। এতে আরো দেরী হয় পরতে। নাভিটা ড্রাই রাখবেন সবসময়। গোসলের পর টিস্যু দিয়ে হালকা চেপে ড্রাই করবেন। ১ মাসের মধ্যে ইনশাআল্লাহ পরে যাবে একাই।
• গোসল কয়দিন পর দিব?
– জন্মের ৩-৭ দিনের মধ্যে প্রথম গোসল দিতে পারেন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যেন বাচ্চার নাভি ভেজা না থাকে। এইজন্য অনেক ডাক্তারই সাজেস্ট করে থাকেন যেন নাভি পরে গেলে গোসল দেওয়া হয়। হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল দিবেন। নাভি পরে যাওয়ার পর চাইলে নিয়মিত গোসল দেওয়া যায়।
• বাচ্চা খাবার পাচ্ছে নাকি বুঝব কিভাবে?
– বাচ্চা দিনে ৬-৮ বার হিসু করলেই বুঝবেন খাবার পাচ্ছে। হিসু স্বাভাবিক কালার হবে, হলুদ হবেনা।
• বাবু এত শুকিয়ে গেল কেন?
– জন্মের পর প্রথমে বাচ্চার ওজন কমে, এটা স্বাভাবিক। হিসু, পটি ঠিক থাকলে এবং বাবু হাসিখুশি থাকলে কোন সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ।
• ফর্মুলা দেয়া লাগবে না তো?
– বাচ্চা যদি সারাদিন কান্না করে, হিসু পটির পরিমাণ ঠিক না থাকে, তাহলে একজন পেডিয়াট্রিশিয়ান দেখিয়ে ফর্মুলা দিতে হতে পারে।
ডাঃ রুবাইয়া বিনতে রশিদ
বিডিএস
রৌদ্রময়ী প্রিনাটাল কোর্স, ব্যাচ ৮