দৌলা ডায়েরী –১০
সেপ্টেম্বর ২০২২
রংপুর থেকে পেয়েছি রৌদ্রময়ী প্রিনাটাল কোর্সের ব্যাচ ৮ এর রোকসানা আক্তার আপুকে। সাপোর্ট পারসন হিসেবে ছিলেন আপুর শাশুড়ী। আমাকে একদিন আপুর শাশুড়ীর সাথে কথা বলতে বললেন একজন সাপোর্ট পারসন হিসেবে উনি কী কী করতে পারেন এই নিয়ে বলার জন্য।
রোকসানা আপুর যে জিনিসটা ভালো লেগেছে, আপু কাছাকাছির মাঝে সব হাসপাতাল, ক্লিনিকে নরমাল সাপোর্টিভ পরিবেশের জন্য খোঁজ নিয়েছেন। উনার ডেটের কয়েক সপ্তাহ আগে হাসপাতালে গিয়ে এক মায়ের বাচ্চার মৃত্যু দেখেন চোখের সামনেই, খুব এফেক্ট করে আপুকে এটা মানসিকভাবে। কিছু প্রশান্তিদায়ক কথা এই সময় উনাকে অনেকটা শান্ত হতে সাহায্য করে।
আপুর পেইন শুরু হওয়ার পর একসময় উনারা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। লেবারের সময়টা খুব ঘটনাবহুল ছিল না। শেষ দিকে প্রগ্রেস খুব দ্রুত হয়। এতটা দ্রুত যে ডিউটি ডাক্তারও হয়ত বুঝতে পারেননি আর তাই বেড এ বসে পাশে জানালা ধরে হাটু গেড়ে থাকা অবস্থায় আপুর বাবুটা চলে আসে, আলহামদুলিল্লাহ! তবে প্রোপার পেরিনিয়াম গার্ড না থাকার কারণে হয়ত বাজে টিয়ার হয় যার জন্য ডেলিভারির পর প্রথম কিছুদিন বেশ ভুগতে হয়েছে।
দুঃখের বিষয় এই সময়টাতেই আশপাশের মানুষ বলতে শুরু করে যে এর চেয়ে সিজারই ভালো ছিল! সিজার যে তলপেটের একটা মেজর অপারেশন এটা অনেকেই বোঝেন না। এই সময়ের ফ্রাস্টেশনগুলো আপু শেয়ার করতেন আমার সাথে। নতুন মায়ের নাজুক মানসিক অবস্থায় কারো সাথে কথা বলতে পারা, সাজেশন পাওয়া, ইনশাআল্লাহ শরীরের অসুবিধাগুলো শীঘ্রই সেরে যাবে এই আশ্বাস পাওয়া খুব দরকার।
আলহামদুলিল্লাহ আপু এখন পুরো সুস্থ আছেন।
রাবেয়া রওশীন
ভার্চুয়াল দৌলা, রৌদ্রময়ী স্কুল