দৌলা ডায়েরী – ৯
জুন ২০২২
ব্যাচ ৭ এর জান্নাতুন নাদিয়া আপু ঢাকায় থাকেন এবং হোম অফিস করছিলেন তাই এক্সারসাইজের প্রতি রেগুলার সময় দেয়া অসুবিধা ছিল। নিউট্রিশন মেইনটেইন করছিলেন। শেষ দিকে ছুটি নিয়ে নেন এবং এক্সারসাইজ আরো সিনসিয়ারলি করতে শুরু করেন।
সব কিছু আপুর ভালোই ছিল। বিপত্তি বাধে যখন আপুর ডাক্তার ডেটের ৩দিন আগেই ইন্ডাকশন দিতে চান, সেটা কাজ না করলে সিজারের কথা বলেন। আপু যখন আরো ১ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে চাইলেন তখন ডেটের ৩ দিন আগে আল্ট্রা, সিটিজি করে রিপোর্ট ভালো থাকলে অপেক্ষা করে ডেটের পরদিন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যেতে বলেন।
আপু সব ভালো থাকলে ডেটের পরও অপেক্ষা করতে চাচ্ছিলেন যেহেতু সারভিক্স প্রিপেয়ার না থাকলে ইন্ডাকশন ফেইল করার বেশ চান্স থাকে। কিন্তু সব ভালো আছে এটা উনাকে নিশ্চিত করে বলবেন এমন ডাক্তার চাচ্ছিলেন। আপু সেকেন্ড অপিনিয়ন নেয়ার জন্য আরেকজন ডাক্তারের কাছে যান। তিনি ডিউ ডেটে পিভি চেক করে বলেন ১সেমি ওপেন হয়েছে, এমনকি বাবুর হেড এতটা নিচে যে উনি পিভি করার সময় টাচ করতে পারছিলেন!
আপু ডেটের পর আরো ১ সপ্তাহ অপেক্ষা করেন। এর মাঝে একদিন কয়েক ঘন্টার জন্য পেইনফুল ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্রাকশন হয়। ১ সপ্তাহ পর সেকেন্ড ডাক্তারের পরামর্শে ইন্ডাকশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে বিভিন্ন কারনে আপু প্রথম হাসপাতালে যান। ইন্ডাকশন দেয়া হয় এবং ফুল ডাইলেশনও হয়। এরপর সাড়ে ৩ ঘন্টার লং পুশিং স্টেজের পরও যখন বেবি বের হয় না, তখন ডাক্তার আর অপেক্ষা করতে চাননি এবং সি-সেকশনে আপুর বাবু হয়, আলহামদুলিল্লাহ।
আপু বলেন পুশিং স্টেজে পেইনের মাঝে সি-সেকশনের কাগজে সাইন করতে বুকটা ফেটে যাচ্ছিল! কেন বাবু নামছিল না পরে জানতে চেয়েছিলাম। জানালেন, ফ্লুইড কম ছিল। ৮ সেমি ডাইলেশনের পর আপুর পানি ভেংগে দেয়া হয়। লেবার ফাস্ট করার জন্য অনেক জায়গায় এই প্র্যাকটিসটা করা হয় কিন্তু এর থেকে ফ্লুইড কমে যাওয়ার কারণে বাচ্চা সহজে বের হতে না পারার মতো পরিস্থিতিও হতে পারে। এই কারণে ন্যাচারালি পানি ভাংগতে দেয়াটাই ভালো। সেখানে ফোরসেপ ডেলিভারি করানোর সুযোগও ছিল না যদিও সেটা ঢাকার অন্যতম সেরা হাসপাতাল। মূলত ফোরসেপ ডেলিভারি বেশ দক্ষতার সাথে করতে হয়।
আপুর খুব ইচ্ছা ছিল সি-সেকশন না করার। ক্কদর আল্লাহ। তবে ভিব্যাকের জন্য আপুর খুব ভালো চান্স আছে ইনশাআল্লাহ
রাবেয়া রওশীন
প্রিনাটাল ইন্সট্রাক্টর ও ভার্চুয়াল দৌলা, রৌদ্রময়ী স্কুল