বাবুর মায়েদের ঈদ আয়োজন
- Posted by MNCC Moderator
- Categories Blog, Others
- Date April 11, 2024
- Comments 0 comment
চোখের পলকে যেন রমাদান চলে যাচ্ছে। এরই সাথে দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ-উল-ফিতর। কোমড় বেঁধে সবাই ঘর পরিস্কার ও রান্না- বান্নার প্ল্যানিং নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু ছোট বাবুর মায়েরা তো বাচ্চা সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছে। কিভাবে কি শুরু করবে বুঝেই উঠতে পারছে না।
তাই, ছোট একটা নোট খাতায় ঘরের সব কাজের লিস্ট করে ফেলুন। একদিন পর্দা ধুয়ে ফেলবেন তো আরএকদিন ওয়াশরুম৷ সবকাজ একসাথে না করে, এক এক দিন এক একটা কাজ সেরে ফেলুন। ঘরে ঝুল খুব দ্রুত পরে যায়। তাই ঝুল গুলো ঈদের ঠিক আগেরদিন পরিস্কার করবেন।
🏠পরিপাটি ঘর গুছানো
ঘরে অনেক সরঞ্জাম দিয়ে সাজানোর চাইতে অল্প কিছু থাকুক কিন্তু পরিপাটি রাখুন। যেহেতু ছোট বাবুদের অনেক জিনিসপত্র থাকায় এমনিতেই ঘর এলোমেলো লাগে। তাই বাড়তি নতুন সরন্জাম সংযোজন না করে পুরোনো গুলোকেই একটু ঘষামাজা করে নেয়াই ভালো। আর বাচ্চার রেগুলার ব্যবহারের জিনিসগুলো সব একটা ঝুড়িতে রেখে এক কোণায় রেখে দিন।
ঈদের দিন বিছানায় নতুন চাদর, টেবিলে নতুন ম্যাট এবং পরিস্কার পর্দা দেয়ার পরেই দেখবেন ঘরের লুক অনেকটা চেন্জ হয়ে গেছে।
অনলাইনে কিছু সুন্দর গ্লিটার লাইট পাওয়া যায়। ঘরের দরজায় বা ড্রয়িং রুমের দেয়ালে, এ লাইট ডিজাইন করে ঝুলিয়ে দিলেও দেখতে ভালো লাগে।
বাবুর মায়েরা অনেক জটিল জটিল রান্নার ঝামেলা না করে, সহজ এবং তাড়াতাড়ি করে নেয়া যায়, এমন সব রান্না করলেই ভালো হয়।
কাটাকুটি ও সেমাই ভাজার কাজ একটু, একটু করে আগেরদিন রাতেই সেরে ফেলুন। যাদের হেল্পিং হ্যান্ড আছে, তাদের সাহায্য নিন। চাঁদরাতে কর্তা মশাইয়ের ছুটি থাকবে, তাই তাকেও কাজে লাগিয়ে দিন অথবা বাবুর দায়িত্ব দিয়ে দিন।
সাহরীতে উঠার অভ্যেস আছে যেহেতু, তাই ঈদের দিন ফজরের ৩০-৪০ মিনিট আগে উঠে পড়ুন৷ এতে করে সব প্রিপারেশন করার অনেকটা সময় পেয়ে যাবেন। ঈদের রাতের ইবাদাতেরও সওয়াব আছে। চেষ্টা করে ২ রাকাআত তাহাজ্জুদও পড়ে নিতে পারেন।
🫕ঝটপট রান্না – বান্না
সাদা পোলাও মোটামুটি সবাই রান্না করতে পারে। এর উপরে কাঠবাদাম এবং পেস্তা বাদাম কুচি ছড়িয়ে দিলেই দেখতে খুব সুন্দর হয়। এতে করে পেঁয়াজ বেরেস্তা করার ঝামেলা এড়ানো যায়।
চিকেন সব ধরনের মশলা দিয়ে মেরিনেট করে একবারে মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে দিলে, আস্তে আস্তে করে রান্না হয়ে যায়। রেডিমেড রোস্টের মশলা গুলো এখন অনলাইনেও পাওয়া যায়। রোস্ট রান্না করলে চিকেন ভাজার ঝামেলা না করাই ভালো। না ভেজে রান্না করলেও স্বাদে খুব একটা পরিবর্তন আসে না।
গরু বা খসীর গোস্তো আগের রাতে কসিয়ে রাখলে, ঈদের দিন সকালে আর একটু পানি দিয়ে রান্না কমপ্লিট করে নেয়া সহজ হয়।
ভেজিটেবল এর আয়োজন না করে। শসা, টমেটো, গাজর, দিয়ে একটা সালাদ রাখতে পারেন।
আপেল, বেদানা, পেয়ারা, তরমুজ, আরও কিছু পছন্দের ফল মিক্স করে, হালকা একটু বিট লবন দিয়ে একটা ফ্রুট সালাদ করে নিতে পারেন।
৩ রঙের ক্যপসিকাম কুঁচি ও কাজুবাদাম দিয়ে একটু টক দই, ভালো মানের টমেটো সস এবং স্বাদমতো লবন ও চিনি দিয়ে মিক্স করলে আর একটা সালাদ আইটেম করা যায়। সাথে একটু চিকেন ভাজাও দেয়া যেতে পারে।
এভাবে ছোট ছোট সহজ রেসিপি গুলো চেষ্টা করলেই দেখবেন টেবিল খাবারের আইটেম দিয়ে ভরপুর হয়ে গেছে।
যারা একদম সহজ এবং সিম্পল আইটেম করতে চান, তারা শুধু রাইস এবং চিকেন আইটেম দিয়ে কাজ চালিয়ে নিবেন। তেহারী বা মোরগ পোলাও করতে পারেন, সাথে ডিম সিদ্ধ এবং সহজ সালাদ।
যাদের বাবুরা খুবই জ্বালাতন করে, একদম কাজ করতে পারেন না। তারা অনলাইনের হেমমেড খাবারের পেজগুলো থেকে রেডিমেড খাবার অর্ডার করিয়ে আনতে পারেন।
🍮ডেজার্ট
সবচেয়ে সহজ ডেজার্ট হচ্ছে – লাচ্ছা সেমাই। দারচিনি-এলাচ, চিনি দিয়ে দুধ জ্বাল দিয়ে রাখলে, মেহমান আসলে ইন্সট্যান্ট ভিজিয়ে সার্ভ করা যায়। যারা কেক বা পুডিং অথবা জর্দা/ফিরনী বানাতে পারেন, তারা আগের দিন বিকেলেই যে কোন একটি বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।
💄ঈদের সাজ
যারা নিজে নিজে মেহেদী দিতে পারেন, বাম হাতের উপর সাইডে অন্তত একটু হলেও মেহেদী দিবেন। নিজের হাতটা যখন দেখবেন, তখনই অনুভব করবেন কাজ করতেও আনন্দ লাগছে। হাতে একটু চুরি, গলায় ছোট একটা চেইন, কানে দুল, ও আঙুলে আংটি পড়ুন এবং ঠোটে হালকা লিপস্টিক দিন। আইলাইনার দিতে না পারলে, কাজল দিয়েই আইলাইনারের মতো একে নিন। আর নতুন জামা তো আছেই। ব্যাস হয়ে গেলো তো!!!
💸ঈদ সালামী
সাজুগুজু করে বাবুর বাবার কাছ থেকে ঈদ সালামী নিতে ভুলবেন না কিন্তু। সাথে বাবুরটাও নিয়ে নিবেন। তাহলে তো দেখবেন মন একদম ফুরফুরা লাগছে।
অনেক টিপস দেয়া হলো। বাবুদের নিয়ে আসলে এ সমস্ত কাজ গুলো করাও চ্যালেন্জিং। যারা কিছুই করতে পারবেন না৷ মনে কষ্ট না নিয়ে দূর দেশে মজলুম মুসলিম উম্মাহ’র কথা চিন্তা করবেন। একদিন হয়তো তাদেরও সুন্দর সাজানো গোছানো সব ছিল। আজ তাদের খোলা আকাশের নিচে ঈদ করতে হচ্ছে। তবুও তারা হাসিমুখে সব মেনে নিচ্ছে। তাহলে আমরা কিছুই করতে না পারলেও সে কষ্ট তো কোন কষ্টই না।
আল্লাহ তা’আলা সকলের ঈদ সহজ ও আনন্দময় করুক।
💝 সবাইকে অগ্রিম ঈদ মোবারক 💝
ইশরাত জাহান তৃষা
প্রিনেটাল এসোসিয়েট ও পার্টিসিপ্যান্ট
রৌদ্রময়ী স্কুল
Other post
You may also like
হাসপাতালে ন্যাচারাল বার্থ সম্ভব: একজন মায়ের অনুপ্রেরণামূলক গল্প
আমি একজন দৌলা হিসেবে আজ একটি অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প শেয়ার করতে চাই। আমার ক্লায়েন্ট আফরোজা আপুর ডেলিভারির অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, সঠিক প্রস্তুতি ও মানসিক দৃঢ়তা থাকলে হাসপাতালে ন্যাচারাল বার্থ সম্ভব।আফরোজা আপু ন্যাচারাল বার্থের প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন। তার স্বামীও …
নরমাল ডেলিভারি: খুবই ভালো অভিজ্ঞতা
গত ১৮ অক্টোবর প্রথমবারের মত পুত্রসন্তানের মা হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। নরমাল ডেলিভারি ছিল, এক্সপেরিয়েন্স খুবই ভাল ছিল আল্লাহর রহমতে।গ্রুপের পোস্ট ফলো করতাম কনসিভ করার পর থেকেই। গ্রুপের পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছি। দায়িত্বশীল এবং সবার জন্য অনেক অনেক দু’আ।আমি দেশের …
অতিরিক্ত ওজন নিয়ে নরমাল ডেলিভারির গল্প
সেপ্টেম্বর এর ১৪ তারিখ আলহামদুলিল্লাহ নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে আমার প্রথম রাজকন্যার মা হলাম। আমার বার্থ স্টোরি শুরুর আগে আমি আমার কনসিভ করার আগের কিছু কথা শেয়ার করতে চাই যাতে আমার মতো যারা একটু মোটা তারা কিছুটা হলেও অনুপ্রাণিত হোন ইনশাআল্লাহ। আমি …