প্রেগন্যান্সিতে প্রোটিনের গুরুত্ব
প্রেগন্যান্সিতে প্রোটিনের গুরুত্ব
আমাদের রক্তের প্লাজমা গঠিত হয় প্রোটিন, পানি ও লবন দিয়ে। প্রেগন্যান্সিতে আপনার শরীরে রক্তের পরিমাণ প্রায় ৫০℅ বেড়ে যায়। কিন্তু এই বৃদ্ধি মূলত নির্ভর করে আপনার খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ কতখানি আছে তার উপর।
এখন কেন রক্তের এই বৃদ্ধি ঘটে?
আপনার শিশু পেটের ভেতর খায় না বা শ্বাস নেয় না। আপনার গর্ভস্থ শিশু পুষ্টি ও অক্সিজেন পায় আপনার শরীরের রক্ত থেকে। প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল আপনার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে সেই রক্তে উপস্থিত পুষ্টি ভ্রূণকে দেয়। এভাবে খাবার পেয়ে ভ্রূণ আস্তে আস্তে বড় হয়। বড় হওয়ার সাথে সাথে বাড়ে ভ্রূণের পুষ্টির চাহিদা। তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে মায়ের শরীরের ২০-২৫% রক্ত প্লাসেন্টাতে চলে যায় এই চাহিদা মেটাতে। যদি মায়ের শরীর থেকে প্রয়োজন মাফিক রক্ত প্লাসেন্টা ও ভ্রূণ না পায়, তাহলে আরো বেশি রক্ত প্লাম্প করে প্লাসেন্টায় আনার জন্য শরীরের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। এই অবস্থাই হচ্ছে প্রিএকলাম্পশিয়া বা উচ্চ রক্তচাপ যা গর্ভকালীন মারাত্মক এক অসুখের নাম। উচ্চ রক্তচাপ যদি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায় বা প্রিএকলাম্পশিয়া যদি একলাম্পশিয়াতে রূপ নেয় তাহলে প্রেগনেন্সি টার্মিনেট করার প্রয়োজন হয়।
শুরুতে কী বলেছিলাম মনে আছে? রক্ত তৈরি হতে প্রয়োজন প্রোটিন। এখন বোঝা যাচ্ছে কেন গর্ভাবস্থায় প্রোটিন এত গুরুত্বপূর্ণ? পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণের অভাব হচ্ছে গর্ভাবস্থায় প্রিএক্লাম্পশিয়া হওয়ার বেশ কিছু কারণের মাঝে অন্যতম কারণ। একজন সুস্থ মা, যার অন্য কোন সমস্যা নেই, তিনি নিজের প্রোটিন গ্রহণের প্রতি মনোযোগী হয়ে প্রিএক্লাম্পশিয়ার ঝুঁকি এড়াতে পারেন।
বোনেরা, প্লিজ গর্ভাবস্থায় প্রোটিন গ্রহণের প্রতি আরো সচেতন হোন। কম পক্ষে ৬০ গ্রাম প্রোটিন গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন আপনার গ্রহণ করা উচিত, আরো ভালো হয় যদি তা বাড়িয়ে ৮০-১০০ গ্রামে পৌঁছাতে পারেন। এই লেখাটা পড়ে যা জানলেন আপনার স্বামীর সাথে শেয়ার করুন যেন উনিও গর্ভাবস্থায় আপনার প্রতিদিনের খাবারে প্রয়োজনীয় প্রোটিন গ্রহণের প্রতি সচেতন হতে পারেন ইনশাআল্লাহ।
রাবেয়া রওশীন,
প্রিনাটাল ইন্সট্রাক্টর, রৌদ্রময়ী স্কুল