সন্তানের হক
- Posted by MNCC Moderator
- Categories Others, Parenting
- Date May 1, 2024
- Comments 0 comment
ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের হক্ক সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। কিন্তু সন্তানেও যে বাবা মায়ের প্রতি কিছু হক্ক থাকে সে ব্যাপারে আমাদের প্রায়ই গাফেল দেখা যায়। আমরা কি জানি, একজন সন্তানের হক্ক শুরু হয় তার জন্মেও আগে থেকে। যখন সে বাবার ঔরস থেকে মায়ের গর্ভে প্রতিস্থাপন তখনই শয়তান থেকে তার হিফাজতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হয়। এটাই তার প্রথম হক্ক। এসময়ের জন্য আল্লাহর রাসূল সাঃ আমাদের চমৎকার একটা দোয়া শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছেন । দোয়াটি হলঃ
بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
অর্থ : ‘‘হে আল্লাহ! তোমার নামে আরম্ভ করছি, তুমি আমাদের নিকট হতে শয়তানকে দূরে রাখ। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবে, তা হতেও শয়তানকে দূরে রাখ।” (বুখারি, হাদিস : ৬৩৮৮; মুসলিম, হাদিস : ১৪৩৪)
সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই মায়ের উচিত তার জন্য আল্লাহর আশ্রয় ও বদনজর থেকে হিফাজত প্রার্থনা করা এবং যতো দ্রুত সম্ভব বাবা বা অন্য কারো নবজাতকের জন্য আজান দেয়া ও তাহনিক করানো। একটা খেজুর চিবিয়ে মুখের কিছুটা লালা নবজাতকের মুখে দেয়াকে তাহনিক বলে। এটা রাসূল সাঃ এর সুন্নাহ। মদীনায় কোনে শিশু জন্ম নিলে তাকে রাসূল সাঃ এর কাছে আনা হতো এবং তার তাহনিক করানো হতো। এখন তো তাহনিকের উপকারিতা চিকিৎসা বিজ্ঞানেও প্রমানিত। জন্মের পর পরই শিশুর শরীরে গ্লুকোজের সরবরাহ ব্যালেন্স করতে এটা কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।
সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করা ও মাথার চুল মুণ্ডন করা উত্তম। হাদিসে সপ্তম দিনে করতে না পারলে চৌদ্দতম দিনে অথবা একুশতম দিনে আকিকা করার কথাও বলা হয়েছে। হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, “প্রত্যেক শিশু তার আকিকার বিনিময়ে বন্ধক স্বরূপ থাকে৷ কাজেই সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে জবাই করবে এবং তার মাথা মুণ্ডন করে নাম রাখবে।” ( সুনানে আবু দাউদ – ২/২৩২) মূলত আকিকা একজন নবজাতকের জানের সদকা স্বরূপ পেশ করা হয়।
নবজাতকের একটি সুন্দর ও অর্থপূর্ণ নাম রাখার ক্ষেত্রে ইসলামে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এটা শিশুর অন্যতম হক্ক। বাবা মায়ের উচিত এই হক্কটা যথাযথভাবে আদায় করা। হাদিসে এসেছে যে,” সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক্ক।” (মুসনাদে বাযয়ার;আলবাহরুয- হাদিস ৮৫৪০)
বড় হওয়ার সাথে সাথে তাকে একটি সুস্থ সুন্দর পরিবেশ করে দেয়াও তার একটি হক্ক। দুনিয়াবি শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামের বুনিয়াদি বিষয়গুলো শেখানোর প্রতিও বাবা মায়ের গুরুত্ব দেয়া উচিত। সবসময় মনে রাখা দরকার; একজন সন্তান শুধুমাত্র নিয়ামত নয় বরং এটা আল্লাহর দেয়া একটা আমানতও এবং আমাদেরকে অবশ্যই আমানতদারিতার পরিচয় দিতে হবে।
রেজওয়ানা রাজ্জাক
রৌদ্রময়ী প্রিনেটাল কোর্স পার্টিসিপ্যান্ট ও এসোসিয়েট
Other post
You may also like
হাসপাতালে ন্যাচারাল বার্থ সম্ভব: একজন মায়ের অনুপ্রেরণামূলক গল্প
আমি একজন দৌলা হিসেবে আজ একটি অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প শেয়ার করতে চাই। আমার ক্লায়েন্ট আফরোজা আপুর ডেলিভারির অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, সঠিক প্রস্তুতি ও মানসিক দৃঢ়তা থাকলে হাসপাতালে ন্যাচারাল বার্থ সম্ভব।আফরোজা আপু ন্যাচারাল বার্থের প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন। তার স্বামীও …
নরমাল ডেলিভারি: খুবই ভালো অভিজ্ঞতা
গত ১৮ অক্টোবর প্রথমবারের মত পুত্রসন্তানের মা হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। নরমাল ডেলিভারি ছিল, এক্সপেরিয়েন্স খুবই ভাল ছিল আল্লাহর রহমতে।গ্রুপের পোস্ট ফলো করতাম কনসিভ করার পর থেকেই। গ্রুপের পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছি। দায়িত্বশীল এবং সবার জন্য অনেক অনেক দু’আ।আমি দেশের …
অতিরিক্ত ওজন নিয়ে নরমাল ডেলিভারির গল্প
সেপ্টেম্বর এর ১৪ তারিখ আলহামদুলিল্লাহ নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে আমার প্রথম রাজকন্যার মা হলাম। আমার বার্থ স্টোরি শুরুর আগে আমি আমার কনসিভ করার আগের কিছু কথা শেয়ার করতে চাই যাতে আমার মতো যারা একটু মোটা তারা কিছুটা হলেও অনুপ্রাণিত হোন ইনশাআল্লাহ। আমি …