আমার বাবুর সুন্নতে খতনা
- Posted by MNCC Moderator
- Categories Blog, Others, Parenting
- Date February 23, 2024
- Comments 0 comment
আমার দুই ছেলেরই জন্মের পর থেকেই চেষ্টা করেছি, যত দ্রুত খৎনা করানো যায়।
কিন্তু কোনবারেই দেশে এমন কোন ডাক্তার খুজে পাইনি যিনি একেবারে ছোট বাচ্চার সারকামশিশন করবেন। যদিও বিদেশে আমার অনেক আত্মীয়ের বাচ্চাদের, জন্মের পরপরই খৎনা করে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হতে পারে একেক দেশের হাইজিন ব্যাবস্থা বা বিভিন্ন সামাজিক প্রথা দ্রুত বা দেরিতে খৎনা করার পেছনে মূল কারন হিসেবে কাজ করে।
📌 এবার আসল কথায় আসি, বড় ছেলের দু বছর+ বয়সে ওকে লেজার কস্মেটিক খৎনা করিয়েছিলাম। প্রায় ২৫ মিনিট সময় লেগেছিলো, লোকাল এনেস্থিসিয়া দিয়েছিলো।
সপ্তাহ খানেকের মাঝে ভালো হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু করানোর সময়ে আমি সামনে থাকায়, ওর প্রচণ্ড কান্নাকাটিতে বেশ ট্রমাটাইজড হয়ে গিয়েছিলাম।
নিজের বাচ্চার শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত পরছে, এটাও আমাকে ভয় লাগিয়ে দিয়েছিলো। (যদিও এই মেথডে খৎনা বেশ সেইফ আলহামদুলিল্লাহ, তবে এরকম সময়ে মা পাশে না থাকলেই ভালো।)
📌 ছোট ছেলের সময়ে আমি আরো সহজ পদ্ধতি খুঁজছিলাম। ফেসবুকেরই এক বোনের মাধ্যমে একজন ডাক্তারের ঠিকানা পাই। যিনি ডিভাইস কস্মেটিক খৎনা করান।
বেশ খোঁজ খবর নিয়ে আমরা তার কাছে যাই। বাবুর বয়স তখন ২ বছর ২ মাস। বেশ কয়েক মাস আগের কথা।
📌 খৎনা পদ্ধতি:
➡ ডাক্তারের পরামর্শমতে দুটো ব্লাড টেস্ট করে, রিপোর্ট নিয়ে চেম্বারে গিয়েছিলাম।
➡ প্রথমেই বাবুকে একটা ওরাল মেডিসিন দেয় (হালকা ঘুম ঘুম ভাবের জন্য)
➡ বাবু যখন ঝিমানো শুরু করে- তখন মূল প্রসিডিওর শুরু হয়। চামড়ার ওপর লোকাল এনেস্থিসিয়া দিয়ে, জীবানু নাশক দিয়ে যায়গাটা মুছে নেয়া হয়।
➡ বাবুর বাবা আর ডাক্তারের এসিস্ট্যান্ট বাবুকে ধরে ছিলো, বাবু হালকা কান্নাকাটি করে। (ব্যাথায় না, ভয়ে)
আমাদের ঠিক আগের পেশেন্ট ছিলো ৫ বছরের এক ছেলে। সে হাসতে হাসতে রুমে ঢুকে, হাসতে হাসতে বের হয়ে এসেছিলো , কিছুটা বড় হওয়াতে আর বাবা মা প্রপার কাউন্সেলিং করায়, সে একটুও ভয় পায়নি, তাই কাঁদেও নি!!.
➡ ডাক্তার চামড়ার অংশটি কেটে একটা ডিভাইস পরিয়ে দেন, কয়েক ফোটা রক্ত হয়তো পরেছিলো! কোন সেলাই, বড় ধরনের রক্তারক্তি কিচ্ছুই হয়নি।
আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ ঘড়ি ধরে মাত্র ১৫ মিনিটে সব কাজ শেষ!
📌 ওষুধ সহ খৎনার মোট চার্জ ছিলো ৬,৭০০ টাকার মতো।
📌 সেদিন বাসায় আসার দু ঘণ্টা পর থেকেই ডায়পার পরিয়েছি।
📌 ৬ দিন পর গিয়ে ডিভাইস খুলিয়ে এনেছি (২/৩ মিনিট লাগে খুলতে)
📌 আমরা এরপর বাবুকে নিয়ে বাসা শিফটিং এর জন্য এক শহর থেকে আরেক শহরে ট্রাভেল করায় শুকাতে কয়েকদিন বেশি লেগেছিলো। রেস্টে থাকলে দ্রুত শুকায়।
সেইম যায়গায় আমার ছেলের পর, আমার ফ্রেন্ডের ছেলেকে করিয়েছিলো, ওর শুকাতে ৬ দিন লেগেছে।
আল্লাহর রহমতে আমি খুবই সন্তুষ্ট এই নতুন পদ্ধতিতে খৎনা করিয়ে। চেষ্টা করলাম, যথেষ্ট বিস্তারিত লিখতে। যেনো ছেলে বাবুর মায়েরা, এই সুন্নাহ পালনে সাহস পান ইনশাআল্লাহ।
হাসনীন চৌধুরী
কো-ফাউন্ডার
মাদার এন্ড চাইল্ড কেয়ার বিডি
Other post
You may also like
যৌথ পরিবারে নতুন মায়ের জন্য টিপস
১।অনেকগুলো একক পরিবার যখন একসঙ্গে থাকে তখন সেটা একটা প্রতিষ্ঠানের মত হয়ে যায়, সেখানে সবার আলাদা কিছু দায়িত্ব থাকে এবং ছকে বাঁধা কিছু নিয়মও থাকে। একক পরিবারে আমরা নিজের মত কিছু ফ্লেক্সিবিলিটি পাই যা যৌথ পরিবারে অনেক সময়ে পাওয়া যায় …
ছোট বাবুর মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য – আসুন সচেতন হই
খাদিজা তার এক মাস বয়সী মেয়ে আমিনাকে কোলে নিয়ে ঘরের মৃদু আলোয় বসে ছিলেন। রাত বাজে আড়াইটা। জানালা ভেদ করে চাঁদের মৃদু আলো ঘুমের কুয়াশা ভেদ করে তার মুখে এসে পড়ল। হঠাৎ থেমে থেমে আমিনার কান্নার শব্দ বাড়ে এবং কমে। …
ডিউ ডেটের পর আমার ৩য় নরমাল ডেলিভারির গল্প
১।আমার এবারের প্রেগন্যান্সিটা ফিজিক্যালি, মেন্টালি বেশি স্ট্রেস্ফুল ছিল। ৬মাস রেগুলার এয়ারপোর্ট থেকে ঢাকা মেডিক্যাল ডিউটি, বড় দুইটার দেখাশোনা, ইমোশনাল ব্রেক ডাউন – সব মিলিয়ে একটু কম যত্ন নিয়েছিলাম নিজের৷ আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সেসব দিন পার করে দিয়েছেন। আমার ইডিডি ছিল ২২/২/২৪। …