Back

এই পর্বে উল্লেখকৃত সব মায়েদের ডিউ ডেট ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ছিল।

শারমিন আপু স্পেনে থাকেন। প্রথম প্রেগ্ন্যাসি। আপুর প্রেগ্ন্যাসির সময় কোনরকম অসুবিধা ছিল না। শুধু শেষের দিকে এসে হিমোগ্লোবিন কমে যায়, এজন্য সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়। স্পেনে প্রেগ্ন্যাসির সময় ডেফিসিয়েন্সি না থাকলে কোন সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয় না। ডেটের কিছুদিন আগে আপুর হঠাৎ পানি ভেঙে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ মত আপু হাসপাতালে ভর্তি হন। ১২ ঘন্টা পরও পেইন না উঠায় পেইন ইনডিউসড করা হয়। পরে প্রসিডিওর এ কোন ভুলের কারনে বাবু অক্সিজেন পাচ্ছিল না। ইমার্জেন্সি সি সেকশন করা হয়। হাসপাতাল থেকে জানিয়েছে তাদের ভুল হয়েছে এবং তারা দুঃখিত। ডেলিভারির পর আপু ও বাবু সুস্থ আছেন আলহামদুলিল্লাহ।

চট্রগ্রামের মৌসুমি আপুর ভিব্যাক নিয়ে আমি আগেই গ্রুপে লিখেছি। আলহামদুলিল্লাহ ডেটের বেশ আগেই ন্যাচরালি পেইন উঠে আপুর ভিব্যাক সফল হয়েছিল আলহামদুলিল্লাহ।

তানজিনা আপু ভিব্যাকের জন্য অনেক বেশী চেষ্টা করেছেন। আপু সুগার কিছুটা বেড়েছিল। খাওয়া কন্ট্রোল আর হাটাহাটি করে নরমাল রেন্জে থাকত৷ আপু আগের ২ টা বেবী আল্লাহর মেহমান। এসব কারনে যশোরের কোন ডাক্তার ভিব্যাকের ব্যাপারে সাপোর্টিভ ছিল না। তারপর ও আপু নিয়মিত এক্সারসাইজ করতেন, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছেন। মনে সাহস রেখেছেন। বেশ কিছুদিন ধরে আপুর ফলস পেইন হচ্ছিল। ব্যাথা কিছুটা বাড়ার পর ভাই ফোন করে বলেছিল আপুকে কখন হাসপাতালে নিবে বা কি করবেন। প্রায় ২ ঘন্টা পরে আবার ফোন পাই যে বাবু নরমালে হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।

শারমিন আপুর লিভার এনজাইম বেড়ে গিয়েছিল। ডেটের আগে ডাক্তার ইনডিউসড করতে চেয়েছিলেন। আপু কিছু সময় নিয়েও ন্যাচরাল পেইন না উঠায় ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন। সিটিজি রিপোর্ট খুব একটা ভালো না হওয়ায় ডাক্তার আর দেরী করতে চান নি। ইনডাকশন দেওয়ার পর পেইন উঠে আপুর ডায়ালেশনও খুব ভালো হচ্ছিল কিন্তু এরমধ্যে বেবী ম্যাকোনিয়াম পাস করে। খুব বেশী রিস্ক নেওয়া যায় নি বেবীর কথা চিন্তা করে, সি সেকশনের মাধ্যমে ডেলিভারি হয়। বাবুর গলায় কর্ড পেঁচানো ছিল। ডেলিভারির পর আপু এবং বাবু দুজন সুস্থ আছে আলহামদুলিল্লাহ।

তানিয়া আপু ভিব্যাকের চেস্টা করছিলেন। আপুর জেস্টেশনাল ডায়বেটিস ছিল। আপু শেষের দিকে এসে ডাক্তার ফাতেমা ইয়াসমিন ম্যামকে দেখানো শুরু করেন। ইডিডি পার হয়ে যাওয়ার পরও আপুর পেইন উঠছিল না। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে উনি আরও অপেক্ষা করতে শুরু করলেন। পানি কিছুটা কমে যায়৷ পানি আরও কমে গেলে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হবে এজন্য ডাক্তার ইনডিউসড করেন। আলহামদুলিল্লাহ!!! ইডিডি পার করে ৪১ সপ্তাহে অনেক কম সময়ে আপুর নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। আপুর ব্লিডিং বেশি হয়েছিল। এখন ভালো আছেন আলহামদুলিল্লাহ।

তানজু আপুর ২য় প্রেগন্যান্সি ছিল। আপুর প্রথম বাবু নরমালে হয়েছিল। এবার প্রথম থেকে ডায়বেটিস ছিল আপুকে ইনসুলিন নিতে হত। ডাক্তার ইডিডির আগে ইনডিউসড করার কথা বলায় আপু রাজী ছিলেন না। আপুর আগের ডেলিভারিতে ইনডাকশন দেওয়ার ব্যাথার অভিজ্ঞতা ছিল। আপু চাইছিলেন পেইন ন্যাচরালী উঠুক এবং এভাবেই প্রগ্রেস করুক। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ইডিডি পর্যন্ত অপেক্ষার সিদ্ধান্ত নিলেন। হঠাৎ আপুর অল্প অল্প পানি ভাঙা শুরু হয়। আপু ন্যাচরালী পেইন উঠার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ডাক্তারকে জানানোর পর উনি সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। আপুর শরীর ভালো লাগছিল না, ঠান্ডা জ্বর ছিল। পিরিয়ডের মত কিছুটা ব্যাথা ছিল তবু ভর্তি হওয়ার পর দেখা গেল ৩.৫ সেমি ডায়ালেশন হয়েছিল। আপু রাত সাড়ে বারোটায় আমাকে মেসেজ দিয়েছিল সেরকম পেইন নেই, ডায়ালেশন ও হচ্ছে না। রাত প্রায় আড়াইটায় আপুর বাবু নরমাল ডেলিভারিতে দুনিয়ায় আসে আলহামদুলিল্লাহ।

ফারইয়াব হাসান
দৌলা, রৌদ্রময়ী স্কুল