প্রিনেটাল কোর্স করি, নরমাল বা সিজার নিয়ে জেদ না ধরি
- Posted by MNCC Moderator
- Categories Blog, Course, Others
- Date December 8, 2023
- Comments 0 comment
বর্তমান সময়টা এমন যাচ্ছে যে কিছু পরিবার একজন মায়ের কমপ্লিকেশনস থাকা সত্ত্বেও নরমাল ডেলিভারির জন্য জেদ ধরে বসে থাকে। আবার কেউ কেউ এপিশিওটোমি এবং লেবার পেইনের ভয় দেখিয়ে গর্ভবতী মা’কে সিজারিয়ান ডেলিভারির জন্য আগেই মানসিকভাবে তৈরি করে ফেলে। ব্যাপারটা অনেকটা লেজকাটা শেয়ালের মতো যে “আমার সিজার হয়েছে তাই তুমিও সিজার করাও”।
এ ধরনের অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সঠিক জ্ঞানের অভাবে যার ভুক্তভোগী হয় মা ও অবুঝ শিশু। অথচ একটু কষ্ট করে নিজে থেকে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করে নিলে ডাক্তারের সিদ্ধান্ত ভুল না সঠিক তা সহজেই বুঝতে পারা যায়। ইন্টারনেট থেকে কিছু কিছু তথ্য সংগ্রহ করে নেয়া যেতে পারে কিন্তু সেসব তথ্যেরও কোন সত্যতা যাচাই করার উপায় থাকে না বরং এসব একজন গর্ভবতী মায়ের মনে আরও জটিল ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে।
এক্ষেত্রে প্রিনেটাল কোর্সের তুলনা হয় না! এখানে ক্লাস নিয়ে থাকেন অভিজ্ঞ ডাক্তার, চাইল্ড বার্থ এডুকেটর এবং মেন্টাল হেলথ কাউন্সিলর। এ কোর্সে একজন মা’কে নরমাল ডেলিভারির জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত করার পাশাপাশি, প্রেগন্যান্সির এ টু জেড, ব্রেস্টফিডিং, নবযাতকের যত্ন, গোসল সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হয় যেন একজন নতুন মা কোন ধরনের কুসংস্কারের ফাঁদে পা না দেয়। এখানে নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত করা হলেও কোন কোন কমপ্লিকেশনসের ক্ষেত্রে সিজারের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাও বুঝতে সাহায্য করা হয়।
একটা সময় কিছু অসাধু ডাক্তারের অযথা সিজারের সিদ্ধান্তে অহরহ মায়েরা সিজারিয়ান ডেলিভারি করাতে বাধ্য ছিল। কিন্তু বর্তমানে নরমাল ডেলিভারি নিয়ে সচেতনকারী প্রিনেটাল কোর্স আসায় পুনরায় ডাক্তারগণ নরমাল ডেলিভারিতে আগ্রহী হচ্ছেন। তবে এখানেও ডাক্তারের সিদ্ধান্ত নিয়ে মনে প্রশ্ন রয়ে যায়…. তাই হয়তো সিজারের সিদ্ধান্তে গর্ভবতী মা ও তার পরিবারেরা এখনও কোন ডাক্তারকে পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস করতে পারেন না।
প্রিনেটাল কোর্স করে একজন মা প্রথমেই ডাক্তারের আচরণ দেখে বুঝতে পারবেন যে তার ডাক্তার নরমাল ডেলিভারি করাতে ইচ্ছুক কি না। সময়মতো সে তার ডাক্তার চেন্জ করতে পারবেন এবং কেন বা কি কারণে সিজারের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে তা নিজেও বুঝতে পারবেন। কারণ নরমাল বা সিজার যেটাই হোক না কেন মা ও শিশু সুস্থ থাকাটাই জরুরী।
সর্বোপরি প্রেগন্যান্সির সময়টা একজন মায়ের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় তার গর্ভের সন্তানের পুষ্টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজেকেও শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হয়৷ এ প্রস্তুতির পথ চলায় প্রয়োজন একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু যার নাম প্রিনেটাল কোর্স।
ইশরাত জাহান তৃষা
প্রিনেটাল কোর্স পার্টিসিপ্যান্ট ও এসোসিয়েট, রৌদ্রময়ী স্কুল
Other post
You may also like
যৌথ পরিবারে নতুন মায়ের জন্য টিপস
১।অনেকগুলো একক পরিবার যখন একসঙ্গে থাকে তখন সেটা একটা প্রতিষ্ঠানের মত হয়ে যায়, সেখানে সবার আলাদা কিছু দায়িত্ব থাকে এবং ছকে বাঁধা কিছু নিয়মও থাকে। একক পরিবারে আমরা নিজের মত কিছু ফ্লেক্সিবিলিটি পাই যা যৌথ পরিবারে অনেক সময়ে পাওয়া যায় …
ছোট বাবুর মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য – আসুন সচেতন হই
খাদিজা তার এক মাস বয়সী মেয়ে আমিনাকে কোলে নিয়ে ঘরের মৃদু আলোয় বসে ছিলেন। রাত বাজে আড়াইটা। জানালা ভেদ করে চাঁদের মৃদু আলো ঘুমের কুয়াশা ভেদ করে তার মুখে এসে পড়ল। হঠাৎ থেমে থেমে আমিনার কান্নার শব্দ বাড়ে এবং কমে। …
ডিউ ডেটের পর আমার ৩য় নরমাল ডেলিভারির গল্প
১।আমার এবারের প্রেগন্যান্সিটা ফিজিক্যালি, মেন্টালি বেশি স্ট্রেস্ফুল ছিল। ৬মাস রেগুলার এয়ারপোর্ট থেকে ঢাকা মেডিক্যাল ডিউটি, বড় দুইটার দেখাশোনা, ইমোশনাল ব্রেক ডাউন – সব মিলিয়ে একটু কম যত্ন নিয়েছিলাম নিজের৷ আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সেসব দিন পার করে দিয়েছেন। আমার ইডিডি ছিল ২২/২/২৪। …