আমার বাচ্চা কি দুধ পাচ্ছে?
- Posted by MNCC Moderator
- Categories Blog, Others
- Date March 25, 2024
- Comments 0 comment
বাচ্চা দুধ ঠিকমতো খাচ্ছে কিনা তা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত থাকি।
আমরা ল্যাকটেটিং মায়েরা অনেক সময়েই যে ভুল করি, তাহল, বাচ্চা কান্না করলে দুধ দেই।
অথচ বাচ্চার খিদে পেলে সে কিছু লক্ষণ আগে থেকেই দেখাতে থাকে।
যতক্ষণে ও কান্না করছে, ততোক্ষণে ওর প্রচুর খিদে পেয়েছে, এবং শুধু তাই নয়.. সে আপসেটও হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় আপনি দুধ দিতে পারবেন ঠিকই। কিন্তু বাচ্চার রাগের জন্য সঠিকভাবে ল্যাচ্ করাটা কষ্টকর হয়ে যায়।
ডিপ ল্যাচ (যে অবস্থায় মায়ের এরিওলা মানে নিপলের চারপাশের কালচে অংশের বেশিরভাগটা বাচ্চার মুখে থাকে, নিপল বাচ্চার মুখের অধিকতর ভেতরে নরম তালুতে লেগে থাকে) ঠিকমতো করতে না পারলে সব গুলো মিল্ক ডাক্ট এ চাপ পরে না, বিধায় দুধের ফ্লো স্লো হয়ে যায়।
দুধের ফ্লো কম হলে বাচ্চা আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে যেতে পারে (এটা মায়ের কোনো পেইন রিলিফ বা ঘুমের মেডিক্যাশনে থাকলেও হতে পারে, আবার দুধ দিতে বেশি দেরি করলেও ঘুম চলে আসতে পারে)। পুরো ফ্লো থাকলে বাচ্চার একটিভলি বারবার গিলতে হয় যার কারণে ঘুমাতে পারে না।
ল্যাচ করতে না পারার আরেকটা ফলাফল হচ্ছে নিপলে ব্যাথা করা। শ্যালো ল্যাচে (যাতে শুধু নিপল মুখের ভেতর থাকে, এরিওলা না) মায়ের নিপল শক্ত তালুতে লেগে থাকে, যাতে ঘষা লেগে লেগে মা ব্যাথা অনুভব করতে পারেন।
সুতরাং মা এবং বাচ্চা দুজনের জন্যই ডিপ ল্যাচ অপরিহার্য, এবং তা করতে হবে বাচ্চাকে শান্ত রেখে।
একটা জিনিস মাথায় রাখবেন বিশেষ করে নবজাতকদের বিষয়ে। তারা জন্মের আগে কখনো ক্ষুদা টের পায় নি। ক্রমাগত পুষ্টি পেয়ে যাচ্ছিল.. সুতরাং ক্ষুদা তাদের জন্য খুব তীব্র একটা অনুভুতি। অর্থাৎ, এইযে খিদে পেয়েছে কিন্তু তাও চুপ আছি এই মাহেন্দ্রক্ষণ খুব ক্ষণিকের।
বাচ্চা শান্ত থাকতে কি করে বুঝবেন খিদে পেয়েছে কিনা?
১. হাত মুখে দেবে
২. হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাখবে
৩. বুকে নাক মুখ ঘষে দুধ খুঁজবে, মাথা উপর নিচ করবে
৪. গালে ধরলে মুখ খুলে দুধ খুঁজবে
৫. ঠোঁট চাটবে বা চুষবে
ওর পেট ভরে গেলে:
১. হাত পা রিল্যাক্স করে দেবে
২. আঙুল খুলে দেবে
৩. দুধ ছেড়ে দেবে
৪. মুখ সরিয়ে দেবে
৫. খাওয়ার বা দুধ টানা কমিয়ে দেবে
৬. ঘুমিয়ে যেতে পারে
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, একপাশের দুধ শেষ হয়ে গেলেও সে শেষের ৪ টি লক্ষণ দেখাতে পারে। অনেক সময় এমনটি হলে খাওয়ার মধ্যে অস্থির বা fussy ও হয়ে যেতে পারে। ওর কি খাওয়া শেষ হলো নাকি এক পাশের দুধ শেষ হলো এটা বুঝার উপায় হলো, তাকে অন্যপাশের দুধ দিয়ে দেখা। যদি খেতে না চায় বা মুখে নিলেও এক্টিভলি না খায় তাহলে বুঝবেন পেট ভরে গেছে। আর পুরো উদ্যমে দুধ টেনে টেনে ঘনঘন গলাধঃকরণ করতে থাকলে বুঝবেন এক পাশেরটি শেষ হয়ে গিয়েছিল। কতক্ষন পর ও অন্যপাশেরটি চাচ্ছে এই সময়টা খেয়াল রাখবেন।
প্রত্যেকটি বাচ্চা unique। আমরা অনেক সময়েই বাচ্চাকে অন্য বাচ্চার সাথে অনিচ্ছাকৃভাবে তুলনা করে ফেলি। কয়বার খেলো, কতক্ষন খেলো, কতক্ষন পরপর খেলো, কতবার পি পটি করলো, বিশেষ করে কত ওজন হলো (যার মাপকাঠি বিদেশি, জেনেটিক্যালি বড় বাচ্চাদের নিয়ে বানানো)- এই সব কিছুই একেক বাচ্চার ক্ষেত্রে একেকরকম হবে।
কেবল আপনার বাচ্চার দেয়া এসব বিভিন্ন সংকেতই তার জন্য ইউনিকলি প্রযোজ্য। তাই এগুলো সঠিকভাবে বুঝা, এবং সময়মত সাড়া দেয়া অত্যন্ত জরুরি।
সালসাবিল কাওসার
দৌলা, রৌদ্রময়ী স্কুল
Other post
You may also like
যৌথ পরিবারে নতুন মায়ের জন্য টিপস
১।অনেকগুলো একক পরিবার যখন একসঙ্গে থাকে তখন সেটা একটা প্রতিষ্ঠানের মত হয়ে যায়, সেখানে সবার আলাদা কিছু দায়িত্ব থাকে এবং ছকে বাঁধা কিছু নিয়মও থাকে। একক পরিবারে আমরা নিজের মত কিছু ফ্লেক্সিবিলিটি পাই যা যৌথ পরিবারে অনেক সময়ে পাওয়া যায় …
ছোট বাবুর মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য – আসুন সচেতন হই
খাদিজা তার এক মাস বয়সী মেয়ে আমিনাকে কোলে নিয়ে ঘরের মৃদু আলোয় বসে ছিলেন। রাত বাজে আড়াইটা। জানালা ভেদ করে চাঁদের মৃদু আলো ঘুমের কুয়াশা ভেদ করে তার মুখে এসে পড়ল। হঠাৎ থেমে থেমে আমিনার কান্নার শব্দ বাড়ে এবং কমে। …
ডিউ ডেটের পর আমার ৩য় নরমাল ডেলিভারির গল্প
১।আমার এবারের প্রেগন্যান্সিটা ফিজিক্যালি, মেন্টালি বেশি স্ট্রেস্ফুল ছিল। ৬মাস রেগুলার এয়ারপোর্ট থেকে ঢাকা মেডিক্যাল ডিউটি, বড় দুইটার দেখাশোনা, ইমোশনাল ব্রেক ডাউন – সব মিলিয়ে একটু কম যত্ন নিয়েছিলাম নিজের৷ আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সেসব দিন পার করে দিয়েছেন। আমার ইডিডি ছিল ২২/২/২৪। …