কেমন হবে রামাদানে প্রিনাটাল ব্যায়ামের রুটিন
- Posted by MNCC Moderator
- Categories Blog, Others
- Date March 24, 2024
- Comments 0 comment
প্রতিটা প্রেগ্ন্যাসি আলাদা। একজন মা’য়ের দুটো প্রেগ্ন্যাসি অভিজ্ঞতাও দু’রকম হয়। একেকজন মায়ের বয়স, শারীরিক গঠন, উচ্চতা, ওজন, প্রেগ্ন্যাসির সার্বিক শারীরিক, মানসিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে তার এক্সারসাইজ রুটিন আলাদা হয়। এখানে লো রিস্ক প্রেগন্যান্ট মায়েদের জন্য ইন জেনারেল কিছু এক্সারসাইজের দিক নির্দেশনা দেয়া হলো।
আপনি যদি গর্ভাবস্থার ২৪-২৫ সপ্তাহে রমাদান শুরু করে থাকেন, তাহলে এক্সারসাইজ নিয়ে না ভাবলেও চলবে। আপনার সুবিধা মতো রেস্ট নিন, ইবাদাতে মনোনিবেশ করুন।
আপনি যদি রোজা না রাখতে পারেন, সেক্ষেত্রে এক্সারসাইজ করতে পারেন।
রমাদানে এক্টিভ থাকাই যথেষ্ট। বাসার স্বাভাবিক কাজ কর্ম করা, দিনে এক দুই বার হালকা পার্কে হাঁটার মতো করে হাঁটা, সিড়ি দিয়ে উঠানামা ইত্যাদি।
কিছু এক্সারসাইজ করা যেতে পারে যেগুলোতে পরিশ্রম কম। যেমন হিপ রোটেশন, লাঞ্জ, বাটারফ্লাই, ফরোয়ার্ড লিনিং ইনভার্সন, পেলভিক টিল্ট /রক, এবং স্বাভাবিক ফ্রি হ্যান্ড মুভস/প্রেগ্ন্যাসি ওয়ার্ম আপ এক্সারসাইজ।
♦হিপ রোটেশন : আপনার হিপের ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়াবে, এতে করে প্রেগ্ন্যাসির সেকেন্ড এবং থার্ড ট্রাইমেস্টারে যে কোমর ব্যাথা হয়, সেটা কমে যাবে। ডেলিভারির সময় কোমরের জয়েন্ট ফ্লেক্সিবল হবে দ্রুত, ডেলিভারি ইজি হবে।
♦লাঞ্জ: দিনে কয়েকবার ৫-১০ বার করে করা যায়। এতে হিপ এবং পেলভিস এরিয়ার ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়ে, যা প্রেগ্ন্যাসি এবং ডেলিভারিকে সহজ করে।
♦বাটারফ্লাই : প্রতিদিন ২০ বার করার চেষ্টা করা।
কোমর থেকে নিচের অংশে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে এই ব্যায়াম, এতে করে শরীরের নিচের অংশ ভারী হয়ে যাওয়া, পায়ে পানি চলে আসা, পা ফুলে যাওয়া, পা’য়ে রক্ত চলাচল কমে যাওয়া ইত্যাদি কষ্টকর অভিজ্ঞতা থেকে মুক্তি পেতে পারেন একজন প্রেগন্যান্ট মা। একইসাথে ব্যাক পেইন কমাতে হেল্প করে এই ব্যায়াম। কোমর এবং পা’য়ের পেশি শক্তিশালী করে।
♦ফরোয়ার্ড লিনিং ইনভার্সন : ৩০ সেকেন্ড করে দিনে ১-৩ বার করা যেতে পারে। প্রতি বার করার মাঝে অন্তত ১৫ মিনিট গ্যাপ দিতে হবে।
এই ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমরের নিচের অংশ প্রসারিত হয়, চারপাশের জয়েন্ট এবং পেশিগুলো প্রসারিত হয়, ফলে বাচ্চা কম্ফোর্টেবল পজিশনে যেতে পারে যাতে করে নরমাল ডেলিভারিতে হেল্প হয়। কোমর বা হিপ পেইন নিরসনেও সাহায্য করে এই ব্যায়াম।
♦পেলভিক টিল্ট/রক: এই ব্যায়াম’টিও ৩-৫ মিনিট করে কয়েকবার করা যায়।
লোয়ার ব্যাক পেইন বা কোমর ব্যাথা কমাতে এই ব্যায়ামের যথেষ্ট ভূমিকা আছে। সায়াটিক নার্ভ পেইন কমাতে সাহায্য করে। পেলভিক ফ্লোরের স্ট্রেংথ বাড়ায়।
♦ফ্রি হ্যান্ড মুভস: ইউটিউবে প্রেগ্ন্যাসি ওয়ার্ম আপ এক্সারসাইজ লিখে সার্চ দিয়ে শরীরের সাথে যায় এমন কিছু এক্সারসাইজ করতে পারেন।
ওয়ার্ম আপ এক্সারসাইজ আপনার শরীরকে ঝরঝরে রাখবে, মন ভালো রাখবে, নতুন জার্নির জন্য প্রস্তুত করবে।
রমাদানে এক্সারসাইজের সময় নিজের সুবিধা মতো নির্ধারণ করে নিলে ভালো। কারো ইফতারের পর পর হাঁটাহাঁটি করার সুযোগ হয়, কারো বা একেবারে তারাবিহ’র পর। অনেকে আবার ফজরের পর হাঁটাহাঁটির সুযোগ কাজে লাগান। তবে প্রতি নামাজের পর ৫-১০ মিনিট এক্সারসাইজ করলে সারাদিন মিলিয়ে বেশ ভালো পরিমাণ এক্সারসাইজ কমপ্লিট হয়ে যায় এবং শরীরের উপরও তেমন চাপ পড়েনা।
📌 রমাদানে রোজা অবস্থায় এক্সারসাইজ করে কষ্ট অনুভব হলে অবশ্যই দিনের বেলা এক্সারসাইজ থেকে বিরত থাকবেন। ইফতারের পর/ তারাবিহ’র পর/সেহরির আগে এক্সারসাইজের সময় নির্ধারণ করতে পারেন
📌 একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, এক্সারসাইজে যেন অতিরিক্ত ক্লান্তি বা ঘাম চলে না আসে। এতে করে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। একইসাথে, যথাসম্ভব চা, কফি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। ক্যাফেইন শরীর থেকে পানি বের করে দেয়, এটা আপনার উপর নেগেটিভ এফেক্ট ফেলতে পারে অনেক ভাবে।
📌 রমাদানের আগে এক্সারসাইজের অভ্যাস না থাকলে এই মাসে অনেক বেশি করে শুরু করতে যাবেন না, যদিও আপনি প্রেগ্ন্যাসির থার্ড ট্রাইমেস্টারে থাকেন না কেন। অল্প অল্প করে প্রতিদিন এক্টিভ থাকবেন, এতেই কাজ হবে ইনশাআল্লাহ।
পরিশেষে বলবো, এক্সারসাইজ শুধু প্রেগ্ন্যাসি বা ডেলিভারির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ না, বরং মা হওয়ার এই এন্ডলেস জার্নির পুরোটা জুড়েই এর অবদান অনস্বীকার্য। শরীর যত ফিট থাকবে, নবজাতকের জন্য পরিশ্রম করা তত সহজ হবে।
হাফসা আক্তার
দৌলা, রৌদ্রময়ী স্কুল
Other post
You may also like
রংধনু রঙের খেলনাগুলো
ছোটবেলায় আমাদের নিকট প্রকৃতির সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে বস্তুটি ছিলো, তা হলো সাত রঙের রংধনু। কারণ অধিকাংশ সময় বৃষ্টির দেখা মিললেও, বৃষ্টির পরের রংধনুর দেখা মিলতো খুবই কম। তাই যে জিনিস খুব কম দেখা যায়, সে জিনিসের প্রতি আকর্ষণও থাকে সবচেয়ে …
যৌথ পরিবারে নতুন মায়ের জন্য টিপস
১।অনেকগুলো একক পরিবার যখন একসঙ্গে থাকে তখন সেটা একটা প্রতিষ্ঠানের মত হয়ে যায়, সেখানে সবার আলাদা কিছু দায়িত্ব থাকে এবং ছকে বাঁধা কিছু নিয়মও থাকে। একক পরিবারে আমরা নিজের মত কিছু ফ্লেক্সিবিলিটি পাই যা যৌথ পরিবারে অনেক সময়ে পাওয়া যায় …
ছোট বাবুর মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য – আসুন সচেতন হই
খাদিজা তার এক মাস বয়সী মেয়ে আমিনাকে কোলে নিয়ে ঘরের মৃদু আলোয় বসে ছিলেন। রাত বাজে আড়াইটা। জানালা ভেদ করে চাঁদের মৃদু আলো ঘুমের কুয়াশা ভেদ করে তার মুখে এসে পড়ল। হঠাৎ থেমে থেমে আমিনার কান্নার শব্দ বাড়ে এবং কমে। …